ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং করতে চাচ্ছেন? কিন্তু বুঝতে পারছেন না কিভাবে শুরু করবেন? জেনে নিন ক্রিপ্টো ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য | Crypto trade

ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং করতে চাচ্ছেন? কিন্তু বুঝতে পারছেন না কিভাবে শুরু করবেন? জেনে নিন ক্রিপ্টো ট্রেডিং সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য | Crypto trade


বর্তমান সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং একটা জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ ফরেক্স ট্রেডিং ছেড়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এর দিকে ঝুঁকছে। আমরা যদি ফরেক্স ট্রেডিং মার্কেটের দিকে তাকাই তাহলে লক্ষ্য করতে পারি যে ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে অপরদিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর কারণ হচ্ছে ফরেক্স ট্রেডিং করতে  অপেক্ষাকৃত একটু বেশি এমাউন্ট দিয়ে ট্রেড শুরু করতে হয়। অপরদিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এ আপনি অনেক ছোট পরিমাণ এমাউন্ট দিয়েও ট্রেডিং শুরু করতে পারেন। 

 

যখন আপনি ফরেক্স ট্রেডিং এ লোকসানের মুখে পড়েন তখন সেটি অনেক বেশি পরিমানে হয় অপরদিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ে লোকসানের খরচ খুবই কম হয়। এই কারণে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং ক্রমাগত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সবার মাঝে।

আপনি যদি ক্রিপ্টো কারেন্সিতে ট্রেডিং শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে কিছু জিনিস জানতে হবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এর শুরুতে এসব জিনিস না জানলেই নয়। আপনি যেকোন ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে ট্রেডিং শুরু করতে পারেন। তবে বর্তমানে যেহেতু বিটকয়েন এর চাহিদা অনেক বেশি এবং এটির মার্কেট ভ্যালু উচ্চতর সেহেতু আমি আপনাকে উপদেশ দিব বিটকয়েন দিয়ে ট্রেডিং শুরু করার জন্য। কারণ এটিতে অল্প সময়ে  ভাল লাভ করা যায় যা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো থেকে করা যায় না। আপনি চাইলে অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়েও ট্রেডিং শুরু করতে পারেন এটি সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছা।


বাংলাদেশ থেকে কিভাবে বিটকয়েন দিয়ে ট্রেড করবো আর কোথায় করব? (Here's how and where you can trade Bitcoins from Bangladesh)

আপনাকে বিটকয়েন রাখার জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। একাউন্ট টি জনপ্রিয় কোন ক্রিপ্টো ওয়ালেটে হলে ভালো হয়। এ জন্য আমি বলব বাইন্যান্স অথবা কয়েনবেস দিয়ে উক্ত ক্রিপ্টো ওয়ালেটটি তৈরি করে নিতে । যেখানে আপনি খুব সহজে ক্রিপ্টোকারেন্সি কিনে জমা রাখতে পারেন। 



ধরুন আপনার নিকট বিটকয়েন ছাড়া অন্য কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি আছে যেমন লাইটকয়েন, ইথারিয়াম ইত্যাদি। চাচ্ছেন বিটকয়েন এ ট্রেড করার জন্য তাই এখন আপনি কি করবেন? এর জন্য জনপ্রিয় কিছু এক্সচেঞ্জ সাইট বা প্লাটফর্ম রয়েছে। যার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার ক্রিপ্টো বা ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো একচেঞ্জ করার পাশাপাশি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ট্রেডও করতে পারবেন। এখানে জনপ্রিয় দশটি ক্রিপ্টো বা ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ সাইট বা প্লাটফর্ম উল্লেখ করা হলঃ


১. কয়েনবেস ( Coinbase)

২. বাইন্যান্স ( Binance)

৩. ক্রাকেন ( Kraken)

৪. ইটোরো ( eToro)

৫. জেমিনি ( Gemini)

৬. ক্রিপ্টো ডট কম ( Crypto dot com)

৭. কয়েনমামা ( Coinmama)

৮. রবিনহুড ( Robinhood)

৯. ট্রেড স্টেশন ( Trade station)

১০. বিস্ক ( Bisq)


আমার নজরে সেরা পাঁচটি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড বা এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মঃ 

 

১) কয়েনবেস ( Coinbase)

কয়েনবেস হচ্ছে একটি নিরাপদ ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময় মাধ্যম, যেটা ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন এবং সঞ্চয় রাখার কাজ করে থাকে।

আমেরিকার সান ফ্রান্সিস্কো তে ২০১২ সালে কয়েনবেস আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানের ডিজিটাল এই মুদ্রা বিনিময় প্লাটফর্মটিতে  ৫ কোটি ৬০ লক্ষেরও বেশি ভেরিফাইড ব্যবহারকারী রয়েছে। বর্তমানে ১০০ টিরও বেশি দেশে কয়েনবেস তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

অনেক ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে যেখান থেকে বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি পাওয়া যায়। কিন্তু সেখান থেকে আপনার বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো বের করে আনতে হলে আপনার কোন বিটকয়েন ওয়ালেট বা  ক্রিপ্টো ওয়ালেট এর প্রয়োজন পড়ে। এমন কিছু ওয়েবসাইট বা অ্যাপ রয়েছে যেখান থেকে আপনার বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি সরাসরি বাংলাদেশি কোন বাংকে বা একাউন্টে নিতে পারবেন না। দেখা যায় এরকম ওয়েবসাইটগুলো প্রায়শই ভিনদেশী হয়ে থাকে আর তারা লোকাল কোন মেথড রাখে না। ঐ সমস্ত ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনগুলো যদি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দিয়ে চাই, তাহলে সেখানে কয়েনবেস কে গেটওয়ে হিসেবে সাপোর্ট করে থাকে। যেমন আমি যদি মাইক্রো টাস্ক রিলেটেড একটি সাইটের কথা বলি, যেমন পিকোওয়ার্কাস। সেখান থেকে আপনি বিটকয়েনের মত আরেকটি ক্রিপ্টোকারেন্সি লাইটকয়েনে নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন হবে লাইটকয়েন ওয়ালেট এড্রেস আর এটি সহজেই আপনি কয়েনবেসে পেয়ে যাবেন অর্থাৎ পিকোওয়ার্কাসের মতো সাইট কয়েনবেস ক্রিপ্টো ওয়ালেট সাপোর্ট থাকে।


এছাড়াও কয়েনবেস ব্যাংক থেকে ডিপোজিট, ব্যাংক ট্রান্সফার, ক্রেডিট বা  ডেবিট কার্ড ইত্যাদি সাপোর্ট করে থাকে। তবে এই সমস্ত সুবিধা শুধু মাত্র গুটিকয়েক দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমাদের দেশে এখনো তা চালু হয়নি।

এছাড়াও আপনি যদি স্টর্ম এক্স অ্যাপ এর কথা ধরেন তাহলে সেখানে বিটকয়েনের দিয়ে থাকে। আর আপনি যদি আপনার বিটকয়েন সেখান থেকে তুলতে চান তাহলে আপনার কয়েনবেস একাউন্ট থাকা অবশ্যকীয়। আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি দুনিয়ায় নতুন হয়ে থাকেন তাহলে কয়েনবেস আপনাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ে এক্সপার্ট হতে সাহায্য করবে কারণ এটির প্রোগ্রাম এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে নতুনরা খুব সহজেই ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত সব ফিচারস  বুঝতে পারে।


এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক কয়েনবেস ব্যবহার করার কিছু সুবিধা এবং কিছু অসুবিধা সমূহ: (Advantages and Disadvantages of using Coinbase)


কয়েনবেসের সুবিধাঃ 

আপনি সকল ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রায় একই জায়গায় থেকে দেখতে পারবেন। এছাড়াও কয়েনবেসের ইউআই ডিজাইন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে নতুনরা সহজে সবকিছু বুঝতে পারে। আপনি এখান থেকে সহজেই বিট কয়েন আদান প্রদান করতে পারবেন। বিটকয়েন ছাড়াও অন্যান্য কয়েন এখানে পেয়ে যাবেন। এছাড়াও রয়েছে বীমার সুবিধা তবে এই সুবিধা টি স্বল্প কয়েকটি দেশের জন্য। অ্যাকাউন্ট ভেরিফিকেশন করা ছাড়াও আপনি কয়েনবেস ব্যবহার করতে পারবেন।


কয়েনবেসের অসুবিধা সমূহঃ

অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ থেকে কয়েনবেস একটু বেশি ফি কাটে। এছাড়াও এতে অল্প কয়েকটি  অপশন রয়েছে। একাউন্ট এ কোন সমস্যা হলে বা লেনদেনে নয়-ছয় হলে আপনার একাউন্টে থাকা যাবতীয়  ক্রিপ্টোকারেন্সি সহ একাউন্ট তারা নিয়ে নেয়। তাই একটু সাবধানে কয়েনবেস ব্যবহার করা  উচিত। 


২) বাইন্যান্স ( Binance)

বাইন্যান্স একটি ক্রিপ্টকারেন্সি এক্সচেঞ্জ ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময় প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বে যতগুলো ক্রিপ্টো ট্রেডিং একচেঞ্জ প্লাটফর্ম রয়েছে তার মধ্যে বাইন্যান্স সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কেমান দ্বীপপুঞ্জে ২০১৭ সালে বাইন্যান্স সর্বপ্রথম তাদের কার্যক্রম শুরু করে বর্তমানে এটির হেডকোয়ার্টারও সেখানে। ২০১৯ এ বাইন্যান্স যুক্তরাষ্ট্র তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বিশ্বে ১৮০ টির ও বেশি দেশে তাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ২০২১ সাল অনুযায়ী অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি একচেঞ্জ প্লাটফর্ম থেকে বাইন্যান্স সবার উপরে রয়েছে। তাদের ব্যবসায়িক লেনদেন প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। যা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি একচেঞ্জ প্লাটফর্ম থেকে অনেক বেশি। বাইন্যান্স সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় রাশিয়াতে এর পরে রয়েছে যথাক্রমে তুর্কি, দক্ষিণ কোরিয়া, এবং ব্রাজিল।

বাইন্যান্সের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি এখানে যদি কোন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করতে চান তাহলে ফি অনেক কম কাটে যেটা মাত্র ০.১ শতাংশ। এছাড়াও এখানে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন ও সঞ্চয় করতে পারেন। বাইন্যান্সে আরেকটি সুবিধা রয়েছে সেটি হলো, এখানে যদি আপনার ক্রিপ্টোকারেন্সি দীর্ঘ সময় ধরে রেখে দেন তাহলে বাইন্যান্স আপনাকে একটি লাভ দেবে আর এই লাভের পরিমাণ ০.৫ থেকে ১০ শতাংশ হয়ে থাকে। 


আপনি যদি কোথাও কাজ করেন আর সেখানে মেথড হিসেবে যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি দেওয়া হয় তাহলে আপনি সরাসরি আপনার বাইন্যান্স একাউন্টে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রানস্ফার করতে পারেন। উক্ত সাইট থেকে এর জন্য আপনার দরকার হবে বাইন্যান্স এর মেইল বা উক্ত কয়েনের অ্যাড্রেস যেটা আপনি বাইন্যান্স থেকেই পেয়ে যাবেন। যেমনটা আপনি কয়েন বেস এ করতে পারেন।

এছাড়াও আপনি সরাসরি ব্যাংক থেকে বাইন্যান্সে ডিপোজিট করতে পারবেন বা ব্যাংক ট্রান্সফার করতে পারবেন। বাইন্যান্সে আরো রয়েছে ক্রেডিট কার্ড সুবিধা। এছাড়াও আছে অনেক রকমের মেথডস। তবে ডেবিট কার্ডের চার্জ একটু বেশি।

বর্তমানে বাইন্যান্সে ১৫০ টিরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি কয়েন পাওয়া যাচ্ছে। বিটকয়েন এর পাশাপাশি অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিতে এখানে ট্রেডিং করতে পারেন। 


এখন জেনে আসি বাইন্যান্স এর কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা সমূহঃ (Advantages and disadvantages of using Binance)


বাইন্যান্স এর সুবিধাঃ

৫০ টিরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি সাপোর্ট করে বাইন্যান্স। এছাড়াও .১৮০ টিরও বেশি টোকেন বাইন্যান্স সাপোর্ট করে। বাইন্যান্স অনেক জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম পাশাপাশি এটি ব্যবহারকারীদের যথেষ্ট নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। এখানে আপনি কম ফির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি একচেঞ্জ, অ লেনদেন করতে পারবেন। বাইন্যান্স এর মোবাইল এপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইট এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে নতুনরা খুব সহজে এটি ব্যবহার করতে পারে। এখানে আপনি ২৪ ঘন্টা ট্রেড করতে পারেন। বাইন্যান্সের ওয়েবসাইটে মোট ২৬ টি ভাষা রয়েছে এছাড়া তাদের কাস্টমার সার্ভিস সেন্টারে ১১ টি ভাষায় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক বা একাউন্ট জনিত যে কোন বিষয়ে সেবা পাওয়া যায়।


বাইন্যান্সের অসুবিধা সমূহঃ

সাম্প্রতিক সময়ে বাইন্যান্স কে অনেক দেশ না করেছে এ তালিকায় রয়েছে খোদ যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। এতে সেখানে থাকা বাইন্যান্স ব্যবহারকারীরা অনেক ভোগান্তিতে পড়েছে। বাংলাদেশও বাইন্যান্স তেমন ভাবে স্বীকৃতি পায়নি। তারপরও  ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে বাইন্যান্স ট্রেড করা যায়। যারা ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এ একেবারে নতুন তাদের বাইন্যান্স দিয়ে শুরু না করাটাই ভালো কারণ ,এটা নতুনদের জন্য তেমন আইডিয়াল নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বাইন্যান্সের কাস্টমার সার্ভিস কিছুটা নিম্নমানের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারা জানিয়েছে তারা তাদের কাস্টমার সার্ভিস কে আরও উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ভালো মানের ক্রিপ্টো ট্রেডিং করতে হলে হলে আমি বলবো সর্বপ্রথম বাইন্যান্স দিয়ে শুরু করার জন্য কারণ এখন বাইন্যান্স সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মার্কেট দখল করে আছে। বাইন্যান্সে ক্রিপ্টো ট্রেড শুরু করার আগে আপনাকে প্রথমে বাইন্যান্স সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। যেম বাইন্যান্স কি? বাইন্যান্স এ কিভাবে ট্রেড করতে হয়? বাইন্যান্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা কি ইত্যাদি ইত্যাদি।

 

৩) ক্রাকেন ( Kraken)

২০১১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ক্রাকেন কারেন্সি একচেঞ্জ এবং ব্যাংক ৮০ টিরও বেশি দেশে তাদের সেবা প্রদান করে আসছে। বর্তমানে প্রায় ৬০ লক্ষ রেজিস্টারকৃত ব্যবহারকারী রয়েছে ক্রাকেনের। ৫০ টিরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি সাপোর্ট করা এই ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময় প্ল্যাটফর্মটিতে আপনি ট্রেড করার অনেক অপশন পেয়ে যাবেন।

আপনি যদি ক্রাকেন ব্যবহারকারী হন তাহলে সেখানে তিন ধরনের প্যাকেজ দেখতে পাবেন যেমন, স্টার্টা্‌ ইমিডিয়েট এবং প্রো। স্টাটার প্যাকেজে আপনি ডিপোজিট, একচেঞ্জ, উইথড্র এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি বিষয়ক ট্রেড করতে পারবেন। আর বাকি দুইটি অর্থাৎ ইমিডিয়েট এবং প্রো তে আপনি তাদের অতিরিক্ত সুবিধা সমূহ পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ট্রেড বিষয়ক টিপস-এন্ড-ট্রিকস সহ আরো নানা ধরনের প্রিমিয়াম সার্ভিস।

ক্রাকেনে আপনার ট্রেড করা এমাউন্টের উপর ভিত্তি করে ফি কাটে যা ০.৯ থেকে ১.৯ শতাংশ। যেটা নিতান্তই অনেক কম। এছাড়াও ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ এর সময় ফির পরিমাণ অনেক কম হয়। তাদের কাস্টমার সাপোর্ট সার্ভিস ভালো থাকা সত্বেও আপনি ইন্টারনেটে অনেক বিতর্কিত রিভিউ পাবেন। যদিও তারা তাদের কাস্টমার সাপোর্ট সার্ভিস কে আরও উন্নত করার চেষ্টা করছে। ক্রাকেন কে কয়েনবেস থেকেও ভালো বলা হয়। এছাড়াও ক্রাকেন এর নিরাপত্তা-ব্যবস্থা বাইন্যান্স থেকে অনেক উন্নত মানের।


ক্রাকেন এর সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাকঃ (Advantages and disadvantages of kraken)

 

ক্রাকেনের সুবিধাঃ

ক্রাকেনে রয়েছে উন্নত মানের নিরাপত্তাব্যবস্থার বিভিন্ন ফিচারস। চোখ ধাঁধানো স্টাইলিস্ট ডিজাইন রয়েছে ক্রাকেনে। ক্রাকেন অনেক স্বনামধন্য প্লাটফর্ম। এখানে সাতটি ফিয়াট কারেন্সি সাপোর্ট করে এছাড়াও রয়েছে ৫০ টিরও বেশী ক্রিপ্টোকারেন্সি কয়েন। আপনি সহজে ব্যাংক থেকে এখানে আপনার অর্থ ডিপোজিট করতে পারবেন। কয়েনবেস এবং বাইন্যান্স থেকে ক্রাকেন এর ফি অনেক কম। একটা উদাহরণ দেই- আপনি যদি কয়েনবেস প্রতি ১০০০ ডলার ট্রেড করেন তাহলে এখান থেকে আপনার ফি কাটবে ৫ ডলার এর মত আর ক্রাকেনে এ ফি কাটবে ১.৬ ডলারের মত। এ কারণেই ক্রাকেন ধীরে ধীরে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিশ্বজুড়ে।

 

ক্রাকেনের অসুবিধা সমূহঃ

আপনি যদি নতুন ব্যবহারকারী অর্থাৎ ক্রিপ্টোকারেন্সি তে নতুন ট্রেডিং শুরু করতে চাচ্ছেন তাহলে ক্রাকেন আপনার জন্য নয়। কারণ এটির সিস্টেম শুধুমাত্র ইন্টারমিডিয়েট বা এক্সপার্টদের জন্য ডিজাইন করা। তাই আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি দুনিয়ায় নতুন হলে ক্রাকেন দিয়ে শুরু না করায় ভালো। এখানে একাউন্ট ভেরিফিকেশন করার সময় আপনাকে একটু ঝামেলায় পড়তে হবে কারণ তাদের ভেরিফিকেশন সিস্টেম যথেষ্ট পরিমাণ ধীরগতিতে কাজ করে। কাস্টমার সাপোর্ট নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। তবে আশা করা যায় উক্ত সমস্যাগুলো ক্রাকেন দ্রুত সমাধান করে ব্যবহারকারীদের জন্য আরো নিত্য নতুন সুবিধা নিয়ে আসবে।

 

৪) ইটোরো ( eToro)

ইটোরো বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ট্রেডিং প্লাটফর্ম। ২০০৭ সালে ইসরাইলের রাজধানী তেলআবিবের প্রতিষ্ঠিত হওয়া ইটোরোর বর্তমানে ১ কোটি ৭০ লাখ এর বেশি রেজিস্টার কৃত ব্যবহারকারী রয়েছে। ইটোরোর কার্যক্রম বিভিন্ন দেশে রয়েছে যার মধ্যে উল্লেখিত অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং সাইপ্রাস। ২০১৮ সালে ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময়ের এই প্রতিষ্ঠানটি ৮০০ মিলিয়ন ডলার যা ২০২০ সালে তিনগুণ বেড়ে ২.৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। প্রতিষ্ঠান হেডকোয়ার্টার বর্তমানে লিমাসসল, সাইপ্রাসে রয়েছে। ইটোরো প্রায় ১৪০ টি দেশে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ইটোরো চালু হয়।

ইটোরো মাত্র ৬ টি ক্রিপ্টোকারেন্সি একচেঞ্জ এর সুযোগ দিয়ে থাকে সেগুলো হচ্ছেঃ বিটকয়েন, বিটকয়েন ক্যাশ, ইথেরিয়াম, এক্স আরপি, লাইট কয়েন এবং এক্স এল এম। ইটোরো তে একই সাথে আপনি ফরেক্স ক্রিপ্টোকারেন্সি, স্টকস, ইন্ডেসিস, কমোডিটিস এবং ইটিএফএস এ যুক্ত হতে পারেন। 

আপনি যদি ইটোরোতে ১০০০ ডলারের ক্রিপ্টো নেন তাহলে তারা আপনাকে ৫০ ডলার বোনাস দিবে। যদিও ইটোরোতে ট্রেড ফি অনেক বেশি প্রায় ০.৭৫ থেকে ২.৯০ শতাংশ (ট্রেড অ্যামাউন্ট এর উপর ভিত্তি করে)

আপনি যদি মার্কিন ট্রেডার হন তাহলে ইটোরো আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো একটি প্লাটফর্ম কারণ এখানে মার্কিন ডলার একমাত্র কারেন্সি যেটিতে আপনি উইথড্র দিনে কোন ফি কাটবেনা কিন্তু অন্যান্য দেশের কারেন্সি তে উইথড্র দিলেন অনেক বেশি ফি কাটে।

আপনি যদি বিট কয়েনের মতো বড় কারেন্সিগুলো ট্রেড করার জন্য সাধারণ এবং স্বনামধন্য কোন প্লাটফর্ম খুঁজে থাকেন তাহলে ইটোরো আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো একটি ক্রিপ্টো কারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ইটরো অনেক জনপ্রিয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি তে যারা নতুন অর্থাৎ বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য ইটোরো যথোপযুক্ত প্লাটফর্ম হতে পারে। তবে সাথে অনুশীলন, দক্ষতা এবং ভাগ্য থাকাটাও জরুরি এখানে।


ইটোরো কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ (advantages and disadvantages of using eToro)


ইটোরোর সুবিধাঃ

ক্রিপ্টোকারেন্সি তে আপনাকে কোন কমিশন দিতে হবেনা ইটোরোতে। এছাড়াও এই ডিজিটাল প্লাটফর্মটি ব্যবহার করা অনেক সহজ। বিশেষ করে মার্কিন নাগরিকরা এখানে খুব সহজেই ক্রিপ্টো ইনভেস্ট করতে পারে যেমনটা অন্যান্য দেশের নাগরিকদের জন্য করতে একটু অসুবিধা হয়। আপনি এখানে একসাথে অনেকগুলো  কয়েন ট্রেড করতে পারবেন যেমনঃ বিটকয়েন, লাইট কয়েন, ইথারিয়াম ইত্যাদি।

 

ইটোরোর অসুবিধা সমূহঃ

ট্রেড করতে এখানে অনেক বেশি ফি দিতে হয়। এছাড়াও ইটোরো কাস্টমার সার্ভিস ততটা উন্নত মানের নয়। এখানে আপনি শুধুমাত্র একটি কারেন্সিতে ইটরো ব্যবহার করতে পারবেন আর সেটা হচ্ছে মার্কিন ডলার। 


৫) জেমিনি ( Gemini)

জেমিনি একটা ডিজিটাল মুদ্রা এক্সচেঞ্জ এবং গ্রাহকদের ডিজিটাল সম্পদ লেনদেন এবং সঞ্চয় করতে দেয়। ২০১৪ সালে এটি নিউইয়র্কে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি নিয়মিত ব্যবহারকারী রয়েছে জেমিনির। এছাড়াও জেমিনিতে প্রায় ২০ টির ও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি সাপোর্ট করে। বর্তমানে 50 টিরও বেশি দেশে জেমিনি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে তবে বাংলাদেশে এখনো তাদের কোনো প্রতিষ্ঠান চালু হবে কিনা সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। জেমিনিতে প্রায় ২৫ টি ফিয়াট কারেন্সি সাপোর্ট করে।

আপনি যদি এখানে ১০০ ডলার মূল্যের কোন বিটকয়েন লেনদেন করেন তাহলে তারা আপনাকে ১০ ডলার বোনাস প্রদান করবে। এছাড়াও আপনি এখানে বিটকয়েন হোল্ড করার মাধ্যমে ইন্টারেস্ট পেতে পারেন।

জেমিনিতে আপনি প্রতিদিন ৫ হাজার ডলার আর প্রতি মাসে ৩০ হাজার ডলার ডিপোজিট করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি এখান থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১ লক্ষ ডলার উইথড্র করতে পারবেন। যারা বড় মাপের ট্রেডার রয়েছেন তাদের জন্য জেমিনি যথেষ্ট নয়।

অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম থেকেও জেমিনি খুব কম পরিমাণে ফি কাটে। তারা ট্রেডে ০.৫০ শতাংশ চার্জ করে। আর অ্যামাউন্ট ট্রান্সফার করার জন্য ০.৯৯ থেকে ১.৪৯ শতাংশ চার্জ করে। অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম থেকে জেমিনি এদিক দিয়ে অনেক ভালো।

জেমিনিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি একচেঞ্জ প্লাটফর্ম এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাবেষ্টিত প্লাটফর্ম ধরা হয়। এখানে আপনি বিটকয়েন, ইথারিয়াম, বিটকয়েন, বিটকয়েন ক্যাশ, জি ক্যাশ সহ আরো অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ট্রেড করতে পারবেন।  জেমিনি কে অনেক সময় কয়েনবেস এর সাথে তুলনা করা হয়। এর কারণ হচ্ছে দুইটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এবং দুটিই প্রায় কাছাকাছি পরিসেবা দিয়ে থাকে। 


এবার জেমিনির কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ (Advantages and disadvantages of using Gemini)


জেমিনির সুবিধাঃ

জেমিনিতে রয়েছে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। খুব সহজে এটি ব্যবহার করার উপযোগী বিশেষ করে নতুনদের জন্য। এখানে ডিপোজিট করতে কোন ফি কাটে না। এককথায় আপনি ফ্রিতে ডিপোজিট করতে পারবেন। মার্কিন ট্রেডারদের জন্য জেমিনি সবচেয়ে উপযুক্ত একটি ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময় প্লাটফর্ম। এছাড়াও অন্যান্য দেশে যেখানে জেমিনি তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্যেও জেমিনী নিত্য নতুন সুযোগ সুবিধা নিয়ে আসছে।

 

জেমিনির অসুবিধা সমূহঃ

যদিও জেমিনি এখনো বিশ্বব্যাপী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা তেমনভাবে করেনি মাত্র গুটিকয়েক দেশে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেমিনি ব্যবহার করতে হলে আপনাকে অনেক তথ্য তাদেরকে প্রদান করতে হয়। অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকেও জেমিনিতে ফি অনেক বেশি। 


ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করার জন্য কিভাবে আপনি নিজের জন্য সেরা ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম  বাছাই করবেন? (How do you choose the best crypto exchange platform for you)

আপনি যদি নিজের জন্য সেরা ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম বাছাই করতে চান তাহলে আপনাকে আগে কিছু বিষয় জানতে হবে যেমনঃ 

 

  • আপনার অর্থ উক্ত ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে কতটুকু নিরাপদ থাকবে। আপনার অর্থ আপনি কোথাও বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন কিন্তু সেটার নিরাপত্তাই যদি না থাকে তাহলে তো আপনি লোকসানের মুখে পড়বেন। এই সমস্যাটি থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে যেটি করতে হবে সেটি হচ্ছে- আপনি যেখানে ক্রিপ্টোকারেন্সি অর্থাৎ অর্থ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন সেখানের ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, রেগুলেটরি লাইসেন্্‌ কোম্পানির লোকেশন এবং তাদের টিম সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হয়ে নেওয়া। এতে আপনি উক্ত প্লাটফর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন। চাইলে ব্যবহারকারীদের রিভিউসমূহ দেখতে পারেন।
  • উক্ত প্লাটফর্মটি কি ভালোভাবে ডিজাইন করা বা ব্যবহার করতে অনেক সহজ? যদি হ্যাঁ হয় তাহলে নিশ্চিন্তে থাকুন। যদি প্ল্যাটফর্মটির সাইট বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এর ইন্টারফেস এবং কার্যকারিতা যদি ভালো না হয় তাহলে সেটি আপনার জন্যও ভালো হবে না। তাই বিনিয়োগ করার আগে দেখে নিন উক্ত প্লাটফরমটি ইউজার ফ্রেন্ডলি কিনা। আপনি সহজে তা ব্যবহার করতে পারছেন কিনা।
  • যেখানে বিনিয়োগ করছেন সেখানে কি কোন ইন্সুরেন্স বা বীমা তহবিল রয়েছে? কারণ বীমা তহবিল ট্রেডারদের জন্য একটি "গোল্ডেন কী"। যখন কোন ট্রেডার মার্কেটে তার অর্থ হারায় তখন সে উক্ত বীমা তহবিল থেকে তার ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নিতে পারে। তাই ট্রেড করার আগে দেখে নিন উক্ত প্ল্যাটফর্মটিতে ইন্সুরেন্স বা বীমা তহবিল নামক কোন সুবিধা রয়েছে কিনা।
  • যেখানে আপনি ক্রিপ্টোকারেন্সি বা অর্থ ইনভেস্ট করছেন উক্ত প্ল্যাটফর্মটির (লিকুইডিটি) তারল্যতা বা স্বচ্ছতা কেমন সেটি লক্ষ্য রাখুন। কারণ অনেক সময় দেখা যায় পুরো কোম্পানিটি অর্থ নিয়ে হারিয়ে যাবে সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে কিছুই করার থাকেনা। এর জন্য আপনি একটি বিষয়ের উপর বেশি নজর দেবেন আর সেটি হচ্ছে যত বেশি ব্যবহারকারী উক্ত প্লাটফর্ম টি ব্যবহার করবে ওই প্রতিষ্ঠান স্বচ্ছতা বা তারল্যতা ততো বেশি থাকবে।
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি লক্ষ্য রাখা উচিত সেটি হচ্ছে ফি। অর্থাৎ আপনি উক্ত প্ল্যাটফর্মটিতে যখন ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন বা সঞ্চয় করবেন অথবা ডিপোজিট বা ট্রান্সফার করবেন তখন কি পরিমাণ ফি কাটে সেটিও দেখতে হবে। বিভিন্ন প্লাটফর্মে বিভিন্ন রকমের অর্থাৎ কম বেশি ফি কাটে। যে প্লাটফর্ম যত কম ফি কাটবে সে প্লাটফর্ম টি তত ভালো সুবিধা দিবে।
  • আপনি যেখানে ট্রেড করতে চাচ্ছেন সে প্ল্যাটফর্মটিতে কতগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সি সাপোর্ট করে সেটিও দেখার বিষয়। প্রায় সকল প্ল্যাটফর্মেই কম বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি কয়েন সাপোর্ট করে তবে সাধারণ কিছু কয়েন প্রায় সব প্লাটফর্মেই থাকে যেমন: বিটকয়েন, ইথারিয়াম, বিটকয়েন। বিটকয়েন ক্যাশ, তিথার, ইউএসডিটি কয়েন, ইত্যাদি। এই ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো প্রায় সকল প্লাটফর্মেই থাকে। তাই আপনার বাছাইকৃত প্ল্যাটফর্মটিতে এরকম কয়েন গুলো সাপোর্ট করে কিনা সেটি দেখে নিবেন। যে প্লাটফর্মে যত বেশি কয়েন সাপোর্ট করে সে প্লাটফর্ম টি তথ্য বেশি ভাল হয়।
  • আপনি যে প্লাটফর্মটি বাছাই করেছেন সেটি আপনার দেশ গ্রহণ করে কিনা তা লক্ষ্যে রাখুন। এরকম অনেক ডিজিটাল মুদ্রা বিষয়ক প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে না করা হয়েছে আবার কিছু আছে চলমান । তাই আপনি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশে উক্ত প্লাটফর্মটি গ্রহণযোগ্য কিনা সেটি যাচাই-বাছাই করে নিবেন।
  •  আপনার লভ্যাংশ আপনার কাছে তুলে আনার জন্য বাছাইকৃত প্ল্যাটফর্মটিতে কি কি  মেথড রয়েছে সেটিও জেনে নিন। কিছু ডিজিটাল প্লাটফর্ম রয়েছে যেগুলোর মেথডে শুধুমাত্র পেপাল, ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ড সাপোর্ট করে। এছাড়াও কিছুতে রয়েছে বিটকয়েন গেটওয়ে মেথড বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি বা লোকাল কারেন্সি। তাই আপনার নিকট কোন  মেথড টা সহজলভ্য সেটি উক্ত প্ল্যাটফর্মটিতে আছে কিনা তা যাচাই করে নিন।


সবকিছুই তো জানলাম কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যারা ট্রেড করতে চায় তাদের জন্য সেরা ক্রিপ্টো একচেঞ্জ প্লাটফর্ম কোনটি? (which is the best crypto exchange platform for Bangladesh?)

এটার উত্তর এককথায় দেওয়া যায় তা হচ্ছে বাইন্যান্স। বাইন্যান্স বাংলাদেশ খুবই জনপ্রিয়। বাংলাদেশি বেশিরভাগ ট্রেডার্স বাইন্যান্স এ ট্রেড করে থাকে। আপনি সোশ্যাল মিডিয়াতে বাংলাদেশের যত ট্রেডার দেখবেন তাদের প্রায় ৯০ শতাংশই বাইন্যান্স কেন্দ্রিক ট্রেড করে থাকে। এছাড়াও যারা নতুন তাদের জন্য বাইন্যান্স একটি সেরা ডিজিটাল ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম হতে পারে। বাইন্যান্স শুধু বাংলাদেশ নয় বরং সারাবিশ্বে খুবই জনপ্রিয়। তাই আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে ট্রেড করতে চান তাহলে আমি বলব বাইন্যান্স দিয়ে শুরু করতে।


আপনার যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং নিয়ে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আজ এই পর্যন্তই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ধন্যবাদ।


আরো পড়ুন:

নিকটবর্তী ভবিষ্যতে ক্রিপ্টো লাইফস্টাইল কি সম্ভব? I Is the crypto lifestyle possible?

Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown October 2, 2021 at 9:27 PM

    কিভাবে একাউন্ট করতে হবে?

  • Unknown
    Unknown December 22, 2021 at 12:36 PM

    বাইনান্সে একাউন্ট করার পর প্রথম ট্রেডিং করার জন্য আমি কি বিকাশ বা নগদ থেকে টাকা দিয়ে ট্রেডিং শুরু করতে পারব?

Add Comment
comment url