ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং কি? গ্রাফিক্স কার্ডের সাথে ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিং এর সম্পর্ক কি? | Cryptocurrency mining details in Bangla


ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং এবং তা কত প্রকার। গ্রাফিক্স কার্ডের সাথে ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিং এর সম্পর্ক কি?


সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতের একটি বিস্ময়কর বিষয়  অর্থাৎ বিটকয়েন এর অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে মাইনিং শব্দটি সবার কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। বলা হয়ে থাকে মাইনিং এর মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে স্বাবলম্বী হওয়া যায় আর এ জন্য বাজারে গ্রাফিক্স কার্ড এর চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে আর এতে নাকি বাজারে গ্রাফিক্স কার্ড এখন পাওয়াই যাচ্ছে না। এই সকল বিষয় সমূহ আসলে কি এবং তা কিভাবে একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত আর এগুলো কিভাবে কাজ করে সেসব নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব: 


ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংঃ (what is cryptocurrency mining?)

এখানে মাইনিং বলতে বুঝানো হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং। স্বর্ণের খনি থেকে যেভাবে স্বর্ণ মাইনিং করা হয় তেমনি ভাবে ডিজিটাল প্লাটফর্ম থেকে বিট কয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো মাইনিং করা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং বুঝতে হলে আমাদের সবার আগে বিটকয়েন থেকে একটু ধারণা নিতে হবে। আমাদের সকলের কাছে পরিচিত একটি শব্দ বিটকয়েন। এ বিটকয়েন হচ্ছে একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিট কয়েনের মতো মার্কেটে আরো প্রচুর ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে যেমন ইথারিয়াম, লাইট কয়েন, ইউএসডিটি, ড্যাশ কয়েন ইত্যাদি। তথ্যমতে জানুয়ারি ২০২১ সাল পর্যন্ত সর্বমোোয় ৬ হাজারেরও বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি বর্তমান মার্কেটে রয়েছে। তো আসল কথায় আসি বিটকয়েন কয়েন হচ্ছে এমন একটি ডিজিটাল মুদ্রা যেটিকে আপনি অনলাইনে স্টোর করে রাখতে পারবেন। আপনার একটা প্রাইভেট একাউন্ট থাকবে ওই অ্যাকাউন্টের একটি এড্রেস থাকবে আর ওই অ্যাকাউন্টেটি তে আপনার বিটকয়েন জমা থাকবে। অনেকটা ব্যাংক একাউন্ট এর মত। আশা করি বুঝতে পেরেছেন ব্যাপারটা।.

আমাদের দেশের লোকাল কারেন্সি মানে অর্থ আমরা ফিজিক্যালি বা সরাসরি দেখতে পারি কিন্তু বিট কয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো আমরা ফিজিক্যালি বা সরাসরি দেখতে পারি না। এগুলো ডিজিটাল প্লাটফর্মে থাকে। ২০০৯ সালে বিশ্বের সর্বপ্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সি হিসেবে বিটকয়েন আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার ক্রিপ্টো কারেন্সি মার্কেটে এসেছে। এইজন্য বিটকয়েন কে ফাদার অফ অল ক্রিপ্টোকারেন্সি বলা হয়ে থাকে। 

আমরা নিত্য প্রতিদিন যে অর্থ ব্যবহার করি যেমন বাংলাদেশের অর্থ বা যুক্তরাষ্ট্রের ডলার অথবা ইন্ডিয়ান রুপি এইগুলো উক্ত দেশগুলোর সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। অর্থাৎ আপনি কি পরিমান অর্থ ব্যবহার করছে তার একটি হিসাব উক্ত দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর নিকট লিপিবদ্ধ করা থাকে। তারা চাইলে খুব সহজেই আপনার অর্থ লেনদেনের হিসাব বের করে ফেলতে পারবে। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সি এমন একটি ডিজিটাল মুদ্রা যেটি ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীর কোন তথ্য কারো নিকট জানা সম্ভব নয়। অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ ডিসেন্ট্রালাইজড ( Decentralized) থাকে। এই মুদ্রা বিনিময়ের কোন নিয়ন্ত্রন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান করে না এটি আমি আপনি বা পৃথিবীর সবাই নিয়ন্ত্রণ করে হাজার হাজার কম্পিউটার অ্যালগরিদম এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। এটি সস্পূর্ন বুঝতে হলে আপনাকে এবারর ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইন সম্পর্কে একটু ধারনা দিই। যেহেতু বর্তমান বিশ্বে বিটকয়েন এখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় তাই আমি ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েন মাইনিং কে নিয়ে শুধু আলোচনা করব। কারণ বাকি সব গুলো ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং একই ভাবে কাজ করে।


অর্থ দিয়ে আমরা যেভাবে ব্যবসা বা লেনদেন করতে পারি তেমনি ভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা বা লেনদেন সম্পন্ন করা যায়। ক্রিপ্টোকারেন্সি আপনি চাইলে লেনদেন করা ছাড়াও এটি দিয়ে ট্রেড বা বিনিয়োগ করতে পারেন । বর্তমানে ক্রিপ্টো কারেন্সি ট্রেডিং খুবই জনপ্রিয় একটি বিষয়। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড বা ক্রিপ্টোকারেন্সি অনেক দেশেই বর্তমানে না করে দেওয়া হয়েছে। যদিও অনেক দেশ এখনো তা সচল রেখেছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি না করার অন্যতম কারণ গুলি হল এতে প্রচুর অস্বচ্ছলতা রয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করে মানুষ এখন অপথ গ্রহন  করছে। এছাড়া ক্রিপ্টোকারেন্সি এর মাধ্যমে আপনি বিপথ হতে পারেন আর উক্ত বিপথককে খুঁজে বের করা প্রায় অসম্ভব।

বিপথ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা সনাক্ত করতে পারে না এছাড়াও বিপথে বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে। এত কিছু হওয়ার সত্তেও ক্রিপ্টোকারেন্সি মানুষের নিকট দিন দিন খুবই জনপ্রিয় হচ্ছে এর কারণ হচ্ছে এটি্র অত্যন্ত নিরাপদ লেনদে্নের সিস্টেম। আপনি কাকে কিভাবে কত অর্থ পাঠাচ্ছেন তা আপনি আর যাকে পাঠাবেন সে ছাড়া কেউ জানতে পারবে না। এ জন্য এটি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাধ্যম ব্যবসা-বাণিজ্য বা  অর্থ লেনদেন করার জন্য।

 

অনেক কথা তো বলে ফেললাম তাহলে এবার ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং প্রসেস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাকঃ

ধরুন আপনার নিকট ১০ বিটকয়েন রয়েছে আপনি এখন তানিম নামের কাউকে উক্ত বিটকয়েনগুলো পাঠাবেন। এতে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি কাটে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ফি টি কারা পায়?  উক্ত ফি টি পায় মাইনার রা। আপনি বিটকয়েন পাঠানো থেকে শুরু করে আপনার বন্ধু তানিম বিটকয়েনগুলো পাওয়া পর্যন্ত এর মাঝখানে যে ট্রানজেকশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় আর এটিকে ভ্যালিডেট এবং প্রসেস করতে যে পরিমাণ পাওয়ার অর্থাৎ এনার্জি বা শক্তি খরচ হয় তা অন্য আরেক প্রান্তে বসা  অনেকগুলো কম্পিউটার সম্পন্ন করে থাকে আর উক্ত কম্পিউটারের সামনে যে বসে থাকে তাকে বলে মাইনার  - অর্থাৎ তার কম্পিউটার এ প্রচেষ্টাকে সম্পন্ন করে আর এর জন্য সে উপহার হিসেবে এই অতিরিক্ত ফি টি পায়। এই প্রসেসে থাকে বিভিন্ন রকম অ্যালগরিদম এবং জটিল গাণিতিক সমস্যাবলি যেগুলো সম্পন্ন করতে ভালো মানের কম্পিউটার প্রসেসর এবং গ্রাফিক্স কার্ড এর প্রয়োজন পড়ে।


আপনার মনে এখন হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে গ্রাফিক কার্ড কি এবং তা কিভাবে কাজ করে? (What is Graphic card? How does it work?)

এইযে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রানজেকশন করতে যে শক্তিটুকু প্রয়োজন হয় সেটি অন্য একটি কম্পিউটারের প্রসেসর গ্রাফিক্স কার্ড থেকে আসে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে গ্রাফিক্স কার্ড বা কম্পিউটার প্রসেসর এগুলো কিভাবে উক্ত কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন। আসলে আমরা যখন গ্রাফিক্স কার্ড নিই তখন সেটিকে আমরা কম্পিউটারে কি কাজে ব্যবহার করি? আমরা যখন কম্পিউটারে গেম খেলি তখন কম্পিউটারের বিভিন্ন গ্রাফিক্স গুলো প্রসেস করে এই গ্রাফিক্স কার্ড। এছাড়াও ভিডিও রেন্ডারিং এর কাজ করে গ্রাফিক্স কার্ড। এইখানে মাইনাররা একটু বুদ্ধি খাটিয়েছে। তারা গ্রাফিক্স কার্ড কোন গেম ভিডিও প্রসেস করার কাজে ব্যবহার না করে সেগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রানজেকশন প্রসেস করার জন্য ব্যবহার করা শুরু করেছে। তাহলে এবার বুঝতে পারছেন কিভাবে গ্রাফিক্স কার্ড বা কম্পিউটারের সিপিইউ দ্বারা মাইনিং করে মাইনাররা। একটি গ্রাফিক্স কার্ড এর বিভিন্ন ধরনের পার্টস থাকে যেমন এটিকে সচল রাখার জন্য পাওয়ার বা এনার্জি দিতে হয়। এটিতে একটি চিপ থাকে। এছাড়া জিপিউ সংযুক্ত থাকে। বিরাম (VRAM) নামক একটি প্রসেসিং সিস্টেম থাকে। পুরো গ্রাফিক্স কার্ডকে ঠান্ডা রাখার জন্য দুইয়ের অধিক কুলিং ফ্যান থাকে।


মাইনিং করার প্রসেস টা কি? (Process of mining)

আপনি যদি ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করতে চান তাহলে আপনার অনেকগুলো গ্রাফিক্স কার্ড থাকতে হবে কমপক্ষে ছয় থেকে সাতটি। একটি গ্রাফিক্স কার্ড দিয়েও মাইনিং করা যায়। আপনাকে গ্রাফিক্স কার্ডগুলো প্যারালাল আকারে একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত করে ব্যবহার করতে হবে। মাইনিং এর অনেক বড় বড় ফার্ম রয়েছে যেখানে প্রায় কয়েক হাজার গ্রাফিক্স কার্ড একসাথে সংযুক্ত করে মাইন করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিট কয়েনের মতো ক্রিপ্টো কারেন্সি গুলোর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষ মাইনিং এর প্রতি আগ্রহ আরও প্রবল হয়েছে। এই কারণে মাইনিং এর জন্য মানুষ বেশি পরিমাণে গ্রাফিক্স কার্ড নিতে শুরু করে দেয় আর এতে মার্কেটের গ্রাফিক্স কার্ডের স্বল্পতা দেখা দেয় এবং দাম হুহু করে বাড়তে থাকে। 


মাইনিং এর যেমনি সুবিধা তেমনি ভাবে কিছু সমস্যা রয়েছে যেমনঃ 

 

  • এতে প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ খরচ হয়।
  • বাংলাদেশ মাইনিং এখনো খুবই দুর্লভ।
  • সবাই ও তাদের পরিমাণে গ্রাফিক্স কার্ড কেনার ফলে বাজারে গ্রাফিক্স কার্ডের স্বল্পতা দেখা দেয় আর এতে গেমাররা গ্রাফিক্স কার্ডের স্বল্পতায় ভোগে। 


কত ধরনের মাইনিং পদ্ধতি রয়েছে? (What types of mining methods are there?)

মাইনিং প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে হার্ডওয়ার মাইনিং এবং ক্লাউড মাইনিং


১) হার্ডওয়ার মাইনিংঃ ( Hardware mining)

হার্ডওয়ার মাইনিং হচ্ছে আপনার নিজস্ব সবকিছু থাকবে অর্থাৎ একটি কম্পিউটার একাধিক গ্রাফিক্স কার্ড, ইলেকট্রিসিটি ইত্যাদির সমন্বয়ে আপনি সবগুলো একসাথে সংযুক্ত করে তা দিয়ে মাইনিং করবেন। আর এর জন্য দরকার হয় বিভিন্ন হার্ডওয়ার এর সাথে সফটওয়্যারও। কিভাবে হার্ডওয়ার মাইনিং করা হয় তা ইন্টারনেটে লিখে সার্চ দিলেই আপনি পদ্ধতিটি পেয়ে যাবেন। হার্ডওয়ার মাইনিং মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে-

  • সলো মাইনিং ( Solo mining)
  • ফুল মাইনিং ( Pool mining)


সলো মাইনিং মূলত আপনি একাই আপনার বিভিন্ন কম্পোনেন্ট দিয়ে মাইনিং করবেন।

ফুল মাইনিং হচ্ছে আপনি একসাথে কয়েকজনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে মাইনিং। অর্থাৎ এটি কে গ্রুপ মাইনিং ও বলা হয়ে থাকে। ফুল মাইনিং মূলত দুই দেশের দুজন ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বসেও করতে পারে। এর জন্য দরকার কিছু মাইনিং রিলেটেড সফটওয়্যার।


২) ক্লাউড মাইনিংঃ (Cloud mining)

অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং হচ্ছে যাবতীয় কম্পনেন্ট  হার্ডওয়ার এন্ড সফটওয়্যার কোন একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির থাকবে আপনি ওই কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে হ্যাশ পাওয়ার নিবেন। আর এর জন্য আপনার দরকার হবে শুধুমাত্র একটি অ্যাকাউন্ট উক্ত ওয়েব সাইটে। আর এতে আপনার মাইনিং শুরু হয়ে যাবে। মাইনিং করার জন্য যাবতীয় কম্পিউটারের কম্পনেন্ট এবং ইলেকট্রিসিটি উক্ত ক্লাউড মাইনিং কোম্পানীটি প্রদান করবে। জনপ্রিয় কিছু ক্লাউড মাইনিং প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেগুলো হলোঃ 

 

  • বি মাইন (Bemine)
  • সে মাইনিং (Shamining)
  • সিসিজি মাইনিং (CCG mining)
  • ফ্রি মাইনিং (Freemining)
  • জেনেসিস মাইনিং (Genesis mining)
  • ই কস (Ecos)
  • হ্যাশ নেস্ট (Hashnest)
  • হ্যাশ ফ্ল্যার (Hasflare)
  • ইবট (Ebot)
  • এই কিউ মাইনিং (IQ mining)


পরবর্তী পোস্টে এসমস্ত ক্লাউড মাইনিং ওয়েবসাইট গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।


এবার দেখে আসা যাক ক্লাউড মাইনিং এবং হার্ডওয়ার মাইনিং এর মধ্যে পার্থক্য গুলিঃ (Difference between Cloud mining and Hardware mining) 


  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর জন্য আপনাকে কম্পিউটারের বিভিন্ন কম্পোনেন্ট বিশেষ করে গ্রাফিক্স কার্ড এবং সিপিইউ নিতে হয়। অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং আপনাকে এসব কোন কিছুই করতে হয় না আপনাকে শুধুমাত্র তাদের একটি প্যাকেজ নিতে হয় অন্য কথায় হ্যাশ পাওয়ার।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর জন্য আপনি যখন প্রোডাক্টগুলো নিবেন তখন শিপিং পড়বে অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এর জন্য কোনো এক্সট্রা এরকম কিছু থাকে না।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর জন্য আপনাকে বিভিন্ন ধরনের পার্টস আলাদা আলাদা ভাবে নিতে হতে পারে আর এর জন্য আপনার ব্যয় বাড়বে অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এমন ব্যাপারটি নেই।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর জন্য প্রচুর ইলেক্ট্রেসিটি অর্থাৎ বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে ইলেক্ট্রিসিটির দাম অত্যন্ত ব্যয়বহুল অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এর সমস্ত ব্যয় উক্ত ক্লাউড মাইনিং কোম্পানী থেকে হবে আপনি শুধু ক্লাউডভিত্তিক মাইনিং অপশনটি চালু রাখবেন তাহলেই হবে।

  • ক্লাউড মাইনিং এর ক্ষেত্রে আপনি প্যাকেজ নেয়ার পর মুহূর্তেই মাইনিং শুরু করে দিতে পারবেন অপরদিকে হার্ডওয়ার মাইনিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হবে এছাড়াও আপনার নেয়া বিভিন্ন হার্ডওয়ার নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর ক্ষেত্রে আপনার সিস্টেম যদি ডাউন হয়ে যায় তাহলে মাইনিং বন্ধ হয়ে যেতে পারে যেকোনো সময়। অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং শতভাগ নিশ্চয়তা দেয় সিস্টেমটা ডাউন না হওয়ার আর এতে আপনি অবিচলভাবে মাইনিং করে যেতে পারবেন।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর ক্ষেত্রে আপনার মাইনিং সচল রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের অতিরিক্ত  ইকুয়েপমেন্ট এর প্রয়োজন পড়ে অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এর ক্ষেত্রে তার কোন প্রয়োজন হয় না।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর জন্য আপনাকে অনেকগুলো কুলিং ফ্যান নিতে হবে আর এর জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন পড়ে অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এর জন্য এগুলো দরকার পড়ে না।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং আপনার কম্পোনেন্টগুলোর তাপমাত্রা সহ ঘরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এ এটি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

  • হার্ডওয়ার মাইনিং এর অতিরিক্ত শব্দ দূষণ করে অপরদিকে ক্লাউড মাইনিং এ আপনি এরকম টি দেখতে পাবেন না।


তাহলে কি ক্লাউড মাইনিং সবচেয়ে সেরা মাধ্যম হবে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করার জন্য? (Is cloud mining the best way to mine cryptocurrencies?)

উত্তর হচ্ছে একদমই না। আপনি যদি এরকম কোন জায়গায় থাকেন যেখানে ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ খরচ খুবই কম এবং সেখানে তাপমাত্রা একটু শীতল তাহলে আপনার উচিত হবে হার্ডওয়ার মাইনিং শুরু করা। ক্লাউড মাইনিং করতে আমি এজন্য নিরুৎসাহিত করছে কারণ এগুলো বেশিরভাগই অপথ হয়ে থাকে  ক্লাউড মাইনিং আপনি যখন তাদের হ্যাশ পাওয়ার গুলো নিবেন তখন সেখান থেকে তারা বিভিন্ন সার্ভিস ফি কেটে নিয়ে যাবে। এমনকি মেয়াদ শেষে হয়তো আপনি আপনার আসল টা নাও পেতে পারেন। তাই আমি বলবো ক্লাউড মাইনিং এর দিকে না যেয়ে হার্ডওয়ার মাইনিং এর দিকে দৃষ্টিপাত করা তবে সেটি যাতে পরিবেশবান্ধব হয় তাঁর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। 

 

আজ এই পর্যন্তই, ভাল লাগলে লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন, ভাল থাকবেন, সুস্থ্য থাকবেন, ধন্যবাদ।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url