জেনে নিন Pocket option broker app সম্পর্কে, এখন অপশন ট্রেডিং হবে আরো সহজ।


দিনদিন ক্রিপ্টো কারেন্সি ট্রাডিং অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাইনান্স এর সাথে পাল্লা দিয়ে অনেক ট্রেডিং প্লাটফর্ম গড়ে উঠছে। তেমন একটা প্লাটফর্ম হচ্ছে পকেট অপশন ব্রোকার। আজকে আমরা এই অ্যাপ্লিকেশনটি নিয়ে আলোচনা করব। আপনি চাইলে খুব সহজেই বাইন্যান্সের মতো এখানেও ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং করতে পারবেন। ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং এর দুনিয়ায় আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে পকেট অপশন ব্রোকার অ্যাপ এর মাধ্যমে শুরু করাটাই আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে বলে আমি মনে করি। কারণ এই অ্যাপ বিশেষ করে যারা ক্রিপ্টো দুনিয়ায় নতুন তাদের জন্যই ডিজাইন করে বানানো হয়েছে। তাহলে চলুন অ্যাপ্লিকেশন টা নিয়ে আলোচনা করা যাক। 

 

অ্যাপ্লিকেশনটির নামঃ (App name)

আইটি ট্রেন্ডেক্স তৈরিকৃত প্লাটফর্ম হচ্ছে পকেট অপশন ব্রোকার (Pocket option broker) । এটি একই সাথে ওয়েব ভার্সন এবং মোবাইল ভার্সন রয়েছে। আপনি চাইলেই উভয় ভার্সন ব্যবহার করতে পারেন। গুগল প্লে স্টোরে ৪.৭ রেটিং প্রাপ্ত এই অ্যাপ্লিকেশনটি এখন পর্যন্ত ১০ লাখেরও বেশি ইন্সটল হয়েছে।

বর্তমানে এ প্লাটফর্ম টি ১৫০ টিরও বেশি মুদ্রায় ট্রেডিং করার সুযোগ দিচ্ছে। ট্রেডারদের ২৪ ঘন্টা সাপোর্ট দেওয়ার জন্য তাদের রয়েছে স্টাবল কানেকশন। এই অ্যাপ্লিকেশনটি আপনাকে ট্রেডিং রিলেটেড সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা সহ স্টক মার্কেট এনালাইসিস করার উপায় বলে দেবে। চলুন এই এপ্লিকেশনটি সকল ফিচারস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

 

যে সকল ফিচার রয়েছে অ্যাপ্লিকেশনটিতে:


চার্ট টাইপঃ (Chat Type)

অ্যাপ্লিকেশনটিতে লগইন করার পর এরকম একটা চার্ট টাইপ দেখতে পাবেন। এখানে যে চার্ট টাইপ টি দেখাচ্ছে সেটি হচ্ছে ক্যান্ডল চার্ট টাইপ। এছাড়াও আরও চার ধরনের চার্ট টাইপ রয়েছে এই অ্যাপ্লিকেশনটিতে। যেমন, এরিয়া (Area), বার্স (Bars), লাইন (Line), হেইকেন আশি (Heikin ashi)। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় চার্ট হচ্ছে ক্যান্ডেলস চার্ট টাইপ।এই চার্ট টাইপ দিয়ে আপনি বিভিন্নভাবে চার্ট এনালাইসিস করতে পারবেন। আপনার যে অপশনটি সুবিধা মনে হয় আপনি সেটি ব্যবহার করতে পারেন। যেহেতু আমরা ক্যান্ডল চার্ট টাইপ টি বাচাই করেছি এখন আমরা এটির মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হবো মানে ট্রেডিং রিলেটেড যত কিছু রয়েছে তা এই চ্যাটের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেব। হোমপেজ অর্থাৎ ক্যান্ডেল চার্ট এ প্রবেশ করার পর আপনি একেবারে উপরের দিকে দেখতে পাবেন মুদ্রা বাছাই করতে বলা হচ্ছে অর্থাৎ আপনি যে মুদ্রায় ট্রেডিং করতে চাচ্ছেন সেটাই বাছাই করবেন। আমি এখানে ইউরো এবং ইউএসডি (Euro/Usd) বাছাই করেছি মানে, আমি এই মুদ্রায় ট্রেডিং করতে চাচ্ছি। এর পাশে দেখতে পাবেন আপনার মোট ব্যালেন্স দেখাচ্ছে অর্থাৎ আপনার অ্যাকাউন্টে কি পরিমাণ অর্থ রয়েছে সেটি এখানে দেখাবে। এর পাশের অপশনটিতে দেখতে পাবেন টপ-আপ ইউর একাউন্ট (Top up your account) নামে একটা অপশন রয়েছে। এখানে গিয়ে আপনি আপনার একাউন্টে অর্থ ডিপোজিট করতে পারবেন আর এটি দিয়ে আপনি ট্রেডিং করবেন। অর্থ কিভাবে ডিপোজিট করতে হয় সেটি আর্টিকেল এর নিচে বলে দেওয়া হয়েছে।


এবার আপনি যদি একটু নিচের দিকে তাকান তাহলে একটি অপশন দেখতে পাবেন Time until purchase নামে। এখান থেকে আপনি কতক্ষণের জন্য ট্রেডিং করতে চাচ্ছেন সেই সময় টি বাছাই করে নিতে পারবেন। এছাড়াও এখানে দেওয়া m1 বা m2 এগুলো হচ্ছে সময়ের নির্দেশক। অর্থাৎ m1 হচ্ছে এক মিনিট সময়। এর পাশে Trade amount যে অপশনটা দেখতে পাচ্ছেন এখানে আপনি কি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ বা ট্রেড করবেন সেটির পরিমাণ লিখুন। এবার আপনি ইন্ডিকেটর অর্থাৎ নির্দেশক চিহ্ন টার দিকে তাকান আপনি যদি মনে করেন যে আপনার দেওয়া সময়ের মধ্যে আপনার মুদ্রাটি মূল্য বৃদ্ধি পাবে তাহলে +৫০% নীল চিহ্নটি ক্লিক করে দিন। আর যদি মনে করেন আপনার মুদ্রাটি আপনার দেওয়া সময়ের মধ্যে হ্রাস পাবে +৫০% লাল চিহ্ন টি তে ক্লিক করে দিন। এবার আপনার ভাগ্য বলে দেবে আপনি জিতবেন নাকি হারবেন। যদি আপনার দেওয়া তথ্য সঠিক হয় তাহলে আপনি এখান থেকে প্রফিট অর্জন করতে পারবেন। 


টুলসঃ (Tools)

এখানে আপনি চার্ট টাইপ এনালাইসিস করার জন্য ইন্ডিকেটর এবং ড্রয়িংস ( Indicator and Drawings) নামে দুটি অপশন পাবেন। ইন্ডিকেটর থেকে আপনি আপনার ট্রেড করা মুদ্রার দরপতন বা বৃদ্ধির সম্ভাবনা আগে থেকেই কিছুটা অনুমান করতে পারবেন। ইন্ডিকেটর মানে নির্দেশক কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। জনপ্রিয় কিছু ইন্ডিকেটর হচ্ছে। EMA, SMA, ADX, RSI etc. আর ড্রয়িংস দিয়ে আপনি চার্টের উপর/নিচ কাস্টমাইজ করতে পারবেন।ইন্ডিকেটর নিয়ে সামনে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ। 


অর্ডারঃ (Orders)

বইয়ের মত অপশনটি হচ্ছে অর্ডার অপশন (Order) এখান থেকে আপনার চলমান এবং অতীতের ট্রেড গুলোর বিস্তারিত দেখাবে। এবং কেমন প্রফিট কামিয়েছেন সেটিও এখানে শো করবে।


টুর্নামেন্টঃ (Tournament)

ট্রেডারদের আকর্ষণ ধরে রাখতে পকেট অপশন ব্রোকার প্লাটফর্ম কয়েকদিন পরপরই কিছু টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। যেখানে থাকে নানা ধরনের ছাড়, এবং প্রাইজবন্ড। অনেক টুনামেন্টে ফ্রি তে অংশগ্রহণ করা যায় আবার অনেক টুনামেন্ট প্রিমিয়াম হয়ে থাকে। আপনি যে সকল টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন সেগুলার লিস্ট প্রগ্রেস ( Progress) এর মধ্যে থাকবে। বর্তমানে যে টুনামেন্ট গুলো চলবে সেগুলো কারেন্ট ( Current) অপশনে থাকবে এছাড়াও ভবিষ্যতে যে সকল টুর্নামেন্ট আসবে সেগুলো আপকামিং (Upcoming) অপশন পেয়ে যাবেন।


বাঁ পাশের থ্রি ডট আইকনটিতে ক্লিক করলে কিছু অপশন দেখতে পাবেন এগুলোর মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে।


১. প্রোফাইলঃ (Profile)

এখানে আপনার যাবতীয় তথ্য প্রদান করবেন যা আপনার নিকট চাওয়া হয়েছে। যেমন আপনার নাম, ইমেইল ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি সেখানে ভেরিফাইড ব্যবহারকারী হওয়ার জন্য আপনার আইডেনটিটি জমা দিতে হবে।


২. ট্রেডিংঃ (Trading)

এ অপশনটিতে ক্লিক করলে আপনি আরও চারটি অপশন পাবেন সেগুলো যথাক্রমে:

  • Quick trading real account
  • Digital trading real account
  • Quick trading demo account 
  • Digital trading demo account


নিচের দুটো অপশন অর্থাৎ ডেমো অ্যাকাউন্টে আপনি কুইক এবং ডিজিটাল ট্রেডিং দুটোই প্র্যাকটিস করতে পারবেন। স্বল্প সময়ের জন্য যে ট্রেড করা হয় আপনার রিয়েল অ্যাকাউন্ট থেকে সেটাই হচ্ছে কুইক ট্রেডিং। আর দীর্ঘ সময় ধরে যে ট্রেডিং করা হয় সেটি হচ্ছে ডিজিটাল ট্রেডিং। আপনি আপনার পছন্দমত ট্রেডিং অপশন বাছাই করে নিন।


ডিপোজিটঃ (Deposites)

এই অপশনটি থেকে আপনি আপনার একাউন্টে অর্থ ডিপোজিট করতে পারবেন যেটা দিয়ে ট্রেডিং করা যাবে। ডিপোজিট করার জন্য আপনাকে কোনো একটি পেমেন্ট অপশন বাছাই করে নিতে হবে। পকেট অপশন ব্রোকারে অর্থ ডিপোজিট করার জন্য অনেকগুলো পেমেন্ট মাধ্যম রয়েছে সেগুলো হলো: ভিসা বা মাস্টার কার্ড, পারফেক্ট মানি, কয়েনবেস, অ্যাড বি ক্যাশ, বিটকয়েন, লাইট কয়েন, বাইনান্স কয়েন, তিতার, ইউএসডি কয়েন, বিটকয়েন ক্যাশ, ইথারিয়াম সহ আরো অনেকগুলো অপশন এখানে খুব সহজে পেয়ে যাবেন। অর্থ ডিপোজিট করার জন্য আপনি যেকোনো একটি পেমেন্ট অপশন বাছাই করে সেটিতে ক্লিক করুন ক্লিক করার পর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ইনপুট করে আপনার একাউন্ট এড্রেস দিয়ে সাবমিট করুন। ব্যাস আপনার উক্ত অ্যাকাউন্ট থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ এখানে চলে আসবে।


উড্রয়াল: (Withdrawal)

উড্রয়াল অপশনটিতে ক্লিক করলে আপনি আরও দুটি অপশন দেখতে পাবেন । Withdrawal funds এবং History। হিস্টরি অপশন থেকে আপনার যাবতীয় উড্র এর অতীত রেকর্ড গুলো দেখতে পাবেন। Withdrawal funds অপশনটি থেকে আপনি চাইলে অর্থ তুলতে পারবেন। আপনি যে মাধ্যম থেকে অর্থ ডিপোজিট করেছেন চাইলে সে মাধ্যমেই আবার অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন। এছাড়াও আরো অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে ব্যাংক অথবা ইলেকট্রনিক সিস্টেমে এখান থেকে অর্থ উত্তোলন করার। আপনি অর্থ উত্তোলন করার জন্য যেকোনো সময় রিকোয়েস্ট করতে পারেন, তবে মিনিমাম ১০ ডলার হলে তখনই কেবল আপনি অর্থ উত্তোলন করার আবেদন জানাতে পারবেন। আবেদন জানানোর তিন দিনের মধ্যে আপনার অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পৌঁছে যাবে।


চ্যাটঃ (Chat)

এই অপশনটি ব্যবহার করে আপনি চাইলে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন ট্রেডারদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন যারা এই পকেট অপশন ব্রোকারের সাথে সংযুক্ত। এছাড়াও যেকোনো সমস্যায় আপনি সাপোর্ট টিমের সাথে অনলাইনে চ্যাট করে সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। 


সাপোর্টঃ (Support)

এই অপশনটি ব্যবহার করে আপনি নির্দিষ্ট কোন সমস্যা তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য সাপোর্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সাপোর্টিং আপনার উক্ত সমস্যাটির সমাধান করে দিবে।


কেন ব্যবহার করবেন এই পকেট অপশন ব্রোকার অ্যাপ্লিকেশনটি? (Why you should use pocket broker?)

অপশন ট্রেডিং এর জন্য প্রথমসারির যে প্লাটফর্ম গুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে খুবই জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হচ্ছে এই পকেট অপশন ব্রোকার। অনেকে হয়ত জানেননা অপশন ট্রেডিং কি। অপশন ট্রেডিং হচ্ছে এমন একটি ট্রেডিং বা বিনিয়োগ যেটা নির্দিষ্ট সময়ে এবং নির্দিষ্ট মূল্য যে প্লাটফর্ম ক্রয় এবং বিক্রয় করার অধিকার দেয়। পকেট অপশন ব্রোকার এই প্ল্যাটফর্মটিতে এই এই ফিচারটি রয়েছে। এছাড়াও এখানে ডেমো অ্যাকাউন্ট নামে একটি অপশন পাবেন যেখানে আপনি নতুন হলেও ডেমো একাউন্টের মাধ্যমে ট্রেডিং শিখতে পারবেন। ডেমো একাউন্টে আপনাকে ১০০০ ডলার ফ্রি দেবে তবে এটি শুধু আপনি শেখার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে যেমন আপনার দক্ষতা অর্জন হবে তেমনি ভাবে ট্রেডিং বিষয়ে অনেক জ্ঞান আগ থেকেই রপ্ত করে ফেলতে পারবেন।

 

যেভাবে ব্যবহার করবেন pocket broker অ্যাপঃ ( How to use pocket broker app)

গুগল সার্চ বক্সে বা গুগোল প্লে স্টোরে Pocket option broker লিখে সার্চ দিলেই অ্যাপ্লিকেশনটি পেয়ে যাবেন। ফোনে ইন্সটল দিয়ে ওপেন করার পর আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে বলবে। রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করে আপনার নাম ঠিকানা এবং ইমেইল দিয়ে ভেরিফাই করে নিন। ইমেইল ভেরিফাই করে লগইন অপশন এ ক্লিক করে অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করুন। ভেরিফাইড ব্যবহারকারী হওয়ার জন্য প্রোফাইল অপশনে গিয়ে আপনার আইডেনটিটি সাবমিট করুন। কয়েক ঘন্টা পর আপনার আইডি টি ভেরিফাই হয়ে গেলে আপনি ট্রেডিং শুরু করতে পারবেন। 


অ্যাপ্লিকেশন টি সম্পর্কে যদি আপনার কোন মতামত থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url