ICO এবং IEO মানে কি? কিভাবে পার্টিসিপেট করবেন?


আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ICO এবং IEO কি? কিভাবে এসবে পার্টিসিপেট করবেন।প্রথমেই আমরা জানবো ICO মানে কি?


ICO মানে কি? (What is ICO?)

সবচেয়ে সহজ ভাবে আই সি ইউ এর মানে জানতে হলে আপনাকে গুগল এ গিয়ে Allicolister.com এই ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এখানে আপনি সবগুলো আই সি ইউ এর লিস্ট পাবেন। 

আইসিইউ মানে হচ্ছে ইনিশিয়াল কয়েন অফারিং অর্থাৎ বেসিক কয়েন রেফারিং বা বাইনারি কয়েন রেফারিং সহজ বাংলায় আপনি প্রাথমিক কয়েন ক্রয় করার ধাপ। অর্থাৎ আপনি প্রাথমিকভাবে কয়েন কিনে যে ইনকাম করবেন যেমন আপনি ১০০ বা ২০০ ডলার কয়েন কিনেছেন সেগুলো আইসিইউতে ১০০০-২০০০ ডলারে প্রফেট আসতো। কিন্তু ২০১৯ সালের পর এই আইসিইউর ওয়েবসাইটগুলো স্ক্যামে ভরে যায়। 



ICO তে কিভাবে কাজ করে বা আইসিইউতে আপনি কিভাবে কয়েন কিনে ইনভেস্ট করবেন? (How you can work in ICO or how do you buy coin and invest in ICO?)


প্রথমে আপনি এই ওয়েবসাইটে যাবেন allicolister.com এই ওয়েবসাইটে আপনি কিছু ইনফরমেশন দেখতে পাবেন। যেমন এরা এখন পর্যন্ত ছয় হাজারের বেশি প্রজেক্ট পাবলিশ করেছে। এবং তাদের ভলিয়ম ক্যাপ ছিল ৩৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়াও তাদের ওয়েবসাইটে বর্তমানে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি একটিভ মেম্বার রয়েছে এবং তাদের ২৩৮ বেশি পার্টনার্স নেটওয়ার্ক রয়েছে। 


তাদের এক্সক্লুসিভ অপশনে কিছু চলমান আইসিইউ কয়েন দেখতে পাবেন। বর্তমানে চলমান একটি প্রজেক্ট তারা লঞ্চ করেছে সেটের নাম হচ্ছে Dreamreal, এরকম আইসিইউ গুলো তারা প্রতিনিয়ত আপডেট করে থাকে নিত্যনতুন আইসিইউ আপনি তাদের ওয়েবসাইটে পাবেন। 


আমাদের মূল আলোচনা ছিল আইসিইউ কিভাবে কাজ করে। আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি ইনিশিয়াল কয়েন অফারিং বা বেসিক কয়েন অফারিং অথবা প্রাথমিক কয়েন অফারিং। 


যাই হোক আমাদের মূল টপিক ছিল ICO  কিভাবে কাজ করে? (How does ICO work?)


Alcoinlister.com এই ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কয়েন/ টোকেন পাবলিশ করে এবং এগুলোর মার্কেটিং করে। তাদের কাজই হচ্ছে নিত্য নতুন কয়েন এবং টোকেন মার্কেটে পাবলিশ করা। এছাড়াও আপনি চাইলে তাদের এখান থেকে এই কয়েন গুলো ক্রয় এবং বিক্রয় করতে পারেন। এভাবেই আইসিইউ ওয়েবসাইটগুলো কাজ করে থাকে।  


সুতারাং আইসিইউ কিভাবে কাজ করে তার সম্পর্কে কিছুটা প্রাথমিক ধারণা পেলেন এবার আমরা জানবো এখান থেকে কিভাবে টোকেন বা কয়েন ক্রয় করবেন।


বর্তমানে allcoinlister ওয়েবসাইটে তাদের একটি প্রজেক্ট আমি টা আগেই বলেছি Dreamreal চলমান রয়েছে চলুন এটি কি এবং এ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।


Dreamreal/Allcoinlister কি? (What is Dreamreal/Allcoinlister?)

এটি হচ্ছে ব্লকচেইন টেকনোলজির অন্তর্ভুক্ত বিশ্বের প্রথম সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে এটি হতে পারে অর্থ বাড়ি-গাড়ি ইত্যাদি নিয়ে। এই সমস্ত জিনিসের কথা চিন্তা করে এই প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে যেখানে মানুষ তার স্বপ্ন নিয়ে কথা বলতে পারবে এবং তার স্বপ্ন অপরের মাঝে শেয়ার করতে পারবে। এই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক যেভাবে কাজ করবে তার একটি নমুনা উদাহরণসহ বুঝিয়ে দিচ্ছি, ধরুন একজন ব্যবহারকারী তার স্বপ্নের কথা এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করলো। এখন এই কথাটিতে যে সকল লোক রিঅ্যাকশন দেবে বা কথাটি শেয়ার করবে তার মাধ্যমে পোস্টদাতা নির্দিষ্ট পরিমান কিছু dreamreal টোকেন পাবে। এভাবে একে অপরের মাঝে তার ড্রিম শেয়ার করে অর্থ উপার্জন করার একটি মাধ্যম তৈরি করতে পারবে। তাদের মিশন এবং গোল হচ্ছে যারা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায় তাদেরকে সাহায্য করা এবং ফেসবুক থেকে তাদের প্লাটফর্ম থেকে আরো উন্নত করা।


যেভাবে এ প্লাটফর্ম এর টোকেন গুলো ক্রয় করবেনঃ (How to buy platform tokens?)

যে প্রোজেক্টের টোকেন আপনি ক্রয় করতে চাচ্ছেন সে প্রজেক্ট এর ওয়েবসাইটে গেলেই আপনি ক্রয় করার অপশন পেয়ে যাবেন। এর জন্য আপনাকে ওই ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আপনি চাইলে বিভিন্ন মাধ্যমে যেমন ক্রেডিট কার্ড ভিসা কার্ড পেপাল ইত্যাদি দিয়ে উক্ত ওয়েবসাইট থেকে ওই প্রোজেক্টের টোকেন ক্রয় করতে পারবেন।


এবার আমরা জানবো IEO মানে কি আর এটি তে কিভাবে পার্টিসিপেট করবেন? (What is IEO? How to participate in IEO?)

IEO মানে হচ্ছে ইনিশিয়াল এক্সচেঞ্জ অফারিং। বাংলায় যদি বুঝিয়ে বলি তাহলে হচ্ছে প্রাথমিকভাবে কয়েন কেনার জন্য আপনাকে যে ওয়েবসাইটে এসে অফার নিতে হবে সেটিকে বলে IEO।  


ইনিশিয়াল এক্সচেঞ্জ অফারিং কারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে? (How is the initial exchange offering controlled?)

যেমন আইসিও হচ্ছে একটা নিজস্ব কোম্পানি যেমন আপনি একটি কয়েন বা টোকেন পাবলিশ করবেন আপনি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন আর ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেটি বিক্রয় করে থাকেন এবং আপনি বিভিন্ন জায়গায় মার্কেটিং করে থাকেন মানুষকে আপনার এই টোকেন বা কয়েন সম্পর্কে জানান যাতে তারা আপনার কয়েনটি ক্রয় করে। এটি হচ্ছে আই সি ইউ। 


আর আই ই ইউ হচ্ছে যে কোন কোম্পানি তাদের আইসিইউ না করে যেকোনো বড় একচেঞ্জ প্লাটফর্মে নিজেদেরকে লিস্ট করে থাকে তাকে আমরা IEO বলি। এই IEO কোম্পানিগুলো অনেক সময় ICO এর মত প্লাটফর্ম তৈরি করে আবার কখনো ডিরেক্ট বড় একচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মগুলোতে সংযুক্ত হয়ে যায়। 


বর্তমানে বড় বড় যেসব এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্ম রয়েছে যেমন বিটরেক্স,বাইনান্স, কিউকোয়েন তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় IEO গুলো হচ্ছে বাইন্যান্সের। কারণ বাইন্যান্সের IEO গুলো থেকে সবচেয়ে বেশি প্রফিট অর্জন করা যায়। বাইন্যান্সের আই ই ও গুলো থেকে যদি আপনি কয়েন ক্রয় করেন তাহলে সেটি 4x 5x বা 6x এর মত বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ আপনি ১০০০ ডলারের কয়েন যদি IEO থেকে ক্রয় করেন তখন বাইন্যান্সে যখন সেটির ট্রেডিং শুরু হবে তখন সেটা অটোমেটিক্যালি আপ হয়ে যেতে পারে আর যেখান থেকে আপনার অনেক বড় প্রফিট আসার সম্ভাবনা রয়েছে।


তবে বিনান্স এর IEO গুলো থেকে কয়েন কিনতে হলে আপনাকে কিছু নিয়ম মানতে হবে। 


নিয়মগুলো হচ্ছেঃ

আপনি যদি বাইন্যান্সের IEO থেকে কোন কয়েন কিনতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে নির্দিষ্ট পরিমান কিছু BNB কয়েন মিনিমাম ২০ দিন আপনার বাইন্যান্স একাউন্টে রাখতে হবে। আপনাদের জানার জন্য বলে দি BNB কয়েন হচ্ছে বাইন্যান্সের একটি টপরেটেড কয়েন। বর্তমানে এক BNB কয়েন সমান ৪০০(+-) মার্কিন ডলার। আর তখন এই কয়েন দিয়ে আপনি ট্রেড করতে পারবেন না বা এই রিলেটেড কোন কিছুই করতে পারবেন না। আপনি শুধুমাত্র যেকোনো একটি IEO আসার আগে ২০ দিন বাইন্যান্সে BNB কয়েন কিনে সেটা আপনার বাইন্যান্স একাউন্টে হোল্ড রাখবেন তারপর আপনি উক্ত IEO তে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।


আপনাকে মিনিমাম ১০০ BNB কয়েন ক্রয় করে আপনার বাইন্যান্স একাউন্টে রাখতে হবে। বর্তমানে ১০০ বিএনবি কয়েনের দাম ৪১,৩১৯ ডলারের মত। তবে এটির প্রাইস যেকোনো সময় আপডাউন হতে পারে। তার মানে বুঝতে পারছেন বাইন্যান্সের IEO গুলোতে পার্টিসিপেট করতে হলে আপনাকে কি পরিমান ইনভেস্ট করতে হবে। এখানে বাইন্যান্স এর নিয়ম গুলো এতটাই কঠিন যে আপনি যদি নিরান্নব্বইটি BNB কয়েন আপনার একাউন্টে রাখেন তার পরেও IEO তে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এবং ২০ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।


তাহলে এটিতো অংশগ্রহণ করতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ১০০ BNB কয়েন কিনে আপনার একাউন্টে রাখতে হবে এবং সেটা দিয়ে কোন ট্রেড করতে পারবেন না। যদি এটি সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে 20 দিন পর আপনি একটি লটারি পাবেন। লটারি মানি হচ্ছে আপনি যদি ২০ দিন একশত বিএনবি হোল্ড করে রাখেন তাহলে বাইনান্স থেকে আপনাকে একটা লটারি নাম্বার দেওয়া হবে। লটারি নাম্বার দিয়ে বাইন্যান্সে যেদিন ড্র হবে অর্থাৎ বাইন্যান্সে তো আপনি জেনে থাকেন যে এক নাম্বার ভলিয়মে সবচেয়ে বেশি ট্রেড হয়ে থাকে। এই জায়গায় বাইন্যান্স একচেঞ্জ প্লাটফর্ম একটি ট্রিক করে, সেটি হচ্ছে আপনি যদি IEO গুলোতে অংশগ্রহণ করতে চান তাহলে আপনাকে ওদের বিএনবি কয়েন ক্রয় করতে হবে এবং সেটি নির্দিষ্ট দিনের জন্য আপনার একাউন্টে হোল্ড রাখতে হবে এতে বিএনবি কয়েনের দাম বাড়তে থাকে।  


এখানে এখানে চার্টে দেখতে পাচ্ছেন আপনি যদি ১০০ থেকে ২০০ বিএনবি রাখেন তাহলে আপনাকে একটি লটারি টিকিট দেওয়া হবে। ২০০ থেকে ৩০০ বিএনবি কয়েন রাখলে আপনাকে দুইটি লটারি টিকিট দেওয়া হবে। ৩০০ থেকে ৪০০ বিএনবি কয়েন রাখলে আপনাকে তিনটি কয়েন দেওয়া হবে। এবং ৪০০ থেকে ৫০০ টি রাখলে ৪ টি  ও ৫০০ বিএনবির  উপরে রাখলে পাঁচটি লটারি টিকিট দেওয়া হবে। তবে এগুলো আপনাকে অবশ্যই ২০ দিন ধরে হোল্ড রাখতে হবে আপনার বাইনান্স একাউন্টে।


IEO টিকেট কিভাবে কাজ করে? (How does IEO tickets work?

ধরুন আপনি ১০০ বিএনবি হোল্ড রেখে একটি টিকেট পেলেন। এরপর নির্দিষ্ট দিনে বাইন্যান্স ওই টিকিট গুলোর নাম্বার দিয়ে একটি ড্র পরিচালনা করবে। আপনার টিকেট নাম্বারের শেষ নাম্বারটি যদি ওই ড্র তে উঠে তাহলে আপনি অনেক রিওয়ার্ড পাবেন। তারপর ওই টিকেট নাম্বারে যেটি থাকবে ওই নাম্বার এর শেষের দিকে নির্দিষ্ট কিছু নাম্বার থাকে যেমন টিকেট নাম্বারটি শেষে যদি ৫ থাকে তাহলে আপনি 10014 টি টোকেন এর পরিমাণে টিকিট পাবেন। এভাবে আপনার শেষে যদি ১২ থাকে তাহলে 1002 টি টিকিট পাবেন। এরকম যখন পাবেন তখন অটোমেটিকেলি আপনার ওই বিএনবি কয়েন গুলোকে কনভার্ট করে এই টোকেন গুলো আপনার একাউন্টে দিয়ে দিবে। অর্থাৎ আপনি ১০০ বিএনবির পরিমাণে যতটি কয়েন পাবেন ততটি আপনার একাউন্টে অটোমেটিকভাবে যোগ হয়ে যাবে। আপনাদের বোঝার জন্য একটি চার্ট দিয়ে দিয়েছি। যদি উক্ত ড্রতে আপনার ভাগ্য ভালো নাও থাকে। অর্থাৎ আপনার নাম্বারটি যদি নাও উঠে তাহলে চিন্তার কিছু নেই আপনার কোন প্রকারেই লস হবে না। আপনি যে .১০০ বিএনবি আপনার একাউন্টে হোল্ড করে রেখেছেন সেগুলো যখন ইচ্ছা তখন বিক্রয় করে দিতে পারবেন।

ছোটখাটো যারা ট্রেডার রয়েছেন তারা বিশেষত্ব এই সকল IEO প্রজেক্টে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কারণ এগুলো তে অংশগ্রহণ করতে হলে প্রচুর পরিমাণ ইনভেস্ট করতে হয়। অপরদিকে ICO তে কম ইনভেস্টমেন্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়।

আশা করি আপনাদেরকে ICO এবং IEO সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে পেরেছি। আপনারা জেনেছেন ICO এবং IEO কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে। তো আজকের জন্য এতটুকুই, ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।


সতর্কীকরণঃ এই ওয়েব সাইটের যাবতীয় তথ্য এবং ব্যাখ্যা সম্পূন্ন নিজ অভিজ্ঞতা এবং ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত সোর্সের আলোকে বিশ্লেষন করা হয়। কোথাও প্রয়োগ করার আগে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার অনুরোধ করা হল। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url