কয়েন কিভাবে চিনবেন বা কোন কয়েনটি সবচেয়ে বেশি লাভজনক?


আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেন কয়েন কি? কয়েন কিভাবে চিনবেন? বা কোন কয়েন টি বেশি লাভজনক। এছাড়া আরো জানতে পারবেন ALT কয়েন কি? ALT কয়েন কোনগুলো? আসুন এটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। 


বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি ক্রিপ্টোকারেন্সি কয়েন এবং টোকেন মার্কেটে রয়েছে। আর দিনের পর দিন এই সংখ্যাটা বেড়েই চলছে। এখানে আপনার প্রশ্ন আসতে পারে কয়েন এবং টোকেন এর মাঝে পার্থক্য কি? একজন সফল ট্রেডার হতে হলে আপনাকে কয়েন এবং টোকেন এর মাঝে পার্থক্য বুঝতে বা জানতে হবে। কেননা এটি চিনলে আপনার ট্রেডিং করতে অনেক সুবিধা হবে। কয়েন এবং টোকেন এর মধ্যে পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করতে হলে আমাদের প্রথমে কয়েন কি তা জানতে হবে। 


কয়েন আসলে কি? (What is coin?)

কয়েনের নিজস্ব ব্লক চেইন থাকে। ব্লকচেইন কি সেটা বিস্তারিত ভাবে জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন। যে ব্লকচেইন এর মাধ্যমে নোড টু নোড বা বাংলায় বললে যে রশি থেকে রশির মাধ্যমে ডাটা ট্রানজেকশন হয়ে থাকে সেটি ওই কয়েনের নিজস্ব প্রটোকল বলা হয়। অর্থাৎ যে কয়েনের ব্লকচেইনে নিজস্ব স্বাধীনতা রয়েছে এবং যখন ইচ্ছা তখন ডাটা ট্রানজেকশন করতে পারে বা ফি বাড়াতে অথবা কমাতে পারে এবং যে কোন সময় নিজেদের ইচ্ছামত আপগ্রেড করতে পারে, এবং অন্য কোন প্রটোকল এর সাহায্য প্রয়োজন হয় না, নিজে নিজে ডাটা ট্রানজেকশন করতে পারে, তাকেই বলে কয়েন।


আমরা যদি Coinmarketcap.com এই ওয়েবসাইটে যাই তাহলে বিটকয়েনের পরে দ্বিতীয় নাম্বার যে কয়েনটা অবস্থান করছে সেটি হচ্ছে ইথেরিয়াম। ইথেরিয়াম কে অনেকে কয়েন মনে করে আবার অনেকে মনে করে এটি হচ্ছে টোকেন তবে আমি যতটুকু জানি ইথেরিয়াম বিটকয়েনের ব্লকচেইন ব্যবহার করে তারা নিজস্ব একটি ERC20 নামে প্রটোকল তৈরি করেছে। এর পরে আমরা যদি দেখি তৃতীয় নম্বরে রয়েছে USDT নামক একটি কয়েন এটি আবার টোকেন ও বটে। এটিকে স্টেবল বা স্থিতিশীল কয়েন বলা হয় কারণ হচ্ছে এটার মার্কেট কখনো আপ ডাউন হয় না। আরেকটি কয়েন রয়েছে XRP নামে। অনেকে বলে থাকে এটি হচ্ছে একটি কয়েন আবার অনেকে বলে এটি একটি টোকেন। আমার মতে দুটি তথ্যই সঠিক। XRP কয়েনের নিজস্ব ব্লকচেইন টেকনোলজি থাকলেও টোকেনের মত করে নিজস্ব আলাদাভাবে তারা একটি ব্যাংক টু ব্যাংক ট্রানজেকশন রয়েছে। অপরদিকে আমরা যদি Litecoin এর কথা বলি তাহলে এটি হচ্ছে একটি কয়েন। অপরদিকে BNB এক্সচেঞ্জ সাইট বাইন্যান্স একচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মের তৈরি করা একটি কয়েন। EOS এটিও একটি কয়েন। XTZ এটিকেও কয়েন বলা হয়। CARDANO/ ADA হচ্ছে কয়েন।  

আশা করি কয়েন সম্পর্কে এখন একটু ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।  


কয়েন এবং ALT কয়েন কি? (What is coin and altcoin?)

কয়েন বলতে আমরা প্রথমে বুঝি থাকি বিটকয়েন যেটি ক্রিপ্টোকারেন্সির মার্কেটে প্রথম এসেছিল। এরপর যতগুলো কয়েন মার্কেটে এসেছে সব গুলোকেই বলা হয় ALT coin. এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন এই ALT coin কি?


এই প্রশ্নটিই প্রায় সবখানেই শোনা যায় যে ALT coin আসলে কোনগুলো? সেটার উত্তর খুব সহজভাবেই দেওয়া যায়, বিটকয়েনের পরে যে কয়েন গুলো মার্কেটে এসেছে তাদের সবাইকে ALT কয়েন বলে। 


কোন কয়েন বেশি লাভজনক? (Which coin is more profitable?)

আমার অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি কে কয়েন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। আপনারা চাইলে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারেন। প্রতিদিনই অনেক কয়েন মার্কেটে আসছে,আমি আজকে যে কয়েন গুলোর কথা বলব এগুলো আমি গত চার-পাঁচ বছর ধরে চিনে থাকি। এগুলো অনেক পুরনো এবং বিশ্বস্ত। এই কয়েনগুলো স্ক্যাম করে মার্কেট আউট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। পাশাপাশি আপনি এই কয়েনগুলোতে ট্রেড করে ভাল প্রফিটও অর্জন করতে পারবেন।  


১. Bitcoin (বিটকয়েন)

আপনি যেখানে ট্রেড করতে যান না কেন আপনাকে প্রথমেই বিটকয়েন ক্রয় করে ডিপোজিট করতে হবে। এরপর সেখানে ট্রেড করতে পারবেন। 


২. XRP (এক্স আরপি)

XRP কয়েন দিয়ে ট্রেড করলে আপনি তেমন প্রফিট অর্জন করতে পারবেন না। আপনারা যারা ১০০ বা ২০০ ডলার অথবা তারও উপরের এমাউন্টের দিয়ে ট্রেড করতে চান তাদের জন্য এক্স আরপি কয়েন দিয়ে ট্রেড করা মোটেও সুবিধাজনক বা লাভজনক হবে না।


৩. Cardano/Ada  (কারডানো/আডা) 

সবচেয়ে বেশি পুরানো এবং ট্রাস্টেড কয়েন হিসেবে বিবেচনা করা হয় ADA কয়েনকে। এটি কখনো স্ক্যাম হয়ে মার্কেট আউট হবে না বলে আশা করা যায়। 


৪. Stellar XLM (স্টেলার এক্সএলএম)

এটিও একটি ভালো পর্যায়ের ট্রাস্টেড বা বিশ্বস্ত কয়েন। তাদের ব্লকচেইন অনেক স্ট্রং এবং তাদের প্লাটফর্ম অনেক ভালো পর্যায় রয়েছে। এটিকেও আপনি আপনার পছন্দের কয়েন লিস্টে রাখতে পারেন। এটা দিয়ে ট্রেড করেও ভালো ইনকাম করতে পারবেন। 


৫. TRX Tron (টিআরএক্স ট্রন) 

আরেকটি জনপ্রিয় কয়েন হচ্ছে TRX বা Tron এটির একটি বিশেষ ফিচার হচ্ছে খুব দ্রুত এই কয়েন ট্রানজেকশন হয়। মার্কেটে যতগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে তার মধ্যে ট্রন ট্রানজেকশনের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি দ্রুত। আপনি কোন ওয়েবসাইট টু ওয়েবসাইট ট্রন ট্রানজেকশন করলে খুব দ্রুতই পেয়ে যাবেন। 


৬. Nem/ Xem ( নেম/জেম)

ভালো ট্রেডিংয়ের জন্য এই কয়েনটি একটি যথোপযুক্ত। এটি দিয়েও ট্রেড করতে পারেন।


৭. Doge coin (ডজ কয়েন)

এই কয়েনটি মাসে ১ থেকে ২ বার মুভমেন্ট করে থাকে। অতিরিক্ত কিছু অর্থ যদি আপনি এই ডজ কয়েনের উপরে ইনভেস্ট করে রাখেন তাহলে ভাল প্রফিট অর্জন করতে পারবেন। 


৮. Zil/ Zilllqa (জিল/জিলকা)

এটিও খুব ভালো প্রফিটেবল কয়েন। আপনার লিস্টে এটিকেও এড করে রাখতে পারেন।


৯. RVN/Ravencoin ( আরবিএন/রাবেনকয়েন)

এটিকে অনেক ভালো একটি কয়েন হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এটির ভবিষ্যৎ অবকাঠামো খুবই স্ট্রং। ভবিষ্যতে এই কয়েন ভালো পর্যায়ে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।


এছাড়াও আরো কিছু ভালো প্রফিটেবল কয়েন রয়েছে যেমন: 


  • Steem Coin
  • XVG/erge
  • IOST
  • &nbsp
  • STRAT/Stratis 
  • NXS/Nexus
  • NXT
  • NAV/Navcoin

 

আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন কোন কোন কয়েন গুলো ভালো এবং কোনগুলোর ট্রেডিং ভবিষ্যত উজ্জ্বল।

সতর্কীকরণঃ এই ওয়েব সাইটের যাবতীয় তথ্য এবং ব্যাখ্যা সস্পূন্ন নিজ অভিজ্ঞতা এবং ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত সোর্সের আলোকে বিশ্লেষন করা হয়। কোথাও প্রয়োগ করার আগে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার অনুরোধ করা হল।  


আরো পড়ুনঃ জেনে নিন টোকেন কি? এবং টোকেন কিভাবে কাজ করে এবং টোকেনের কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url