জেনে নিন টোকেন কি? টোকেন কিভাবে কাজ করে এবং টোকেনের কিছু সুবিধা ও অসুবিধা।

 


আজকে আমরা আলোচনা করব টোকেন কি? কীভাবে এটি কাজ করে?


টোকেন কি? (What is Token?)

যেসকল ক্রিপ্টো কারেন্সি তাদের ট্রানজেকশন ফি ক্ষমতা বাড়াতে পারে না এবং তারা তাদের ব্লক চেইন সিস্টেম আপগ্রেড করতে পারেনা এগুলোই হচ্ছে টোকেন। 


টোকন মূলত কোন প্রজেক্ট কেন্দ্রিক ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। ক্রিপ্টোকারেন্সি কয়েন হচ্ছে ট্রেডিং করার জন্য অর্থাৎ এগুলো ক্রয় হবে বিক্রয় হবে এবং এটির মার্কেট হ্রাস বা বৃদ্ধি পাবে। আর টোকেন হচ্ছে কোন একটি প্রজেক্ট কেন্দ্রিক তৈরি করা হয়ে থাকে। আপনাদেরকে যদি একটি উদাহরণ দেই তাহলে ব্যাপারটি বুঝতে সুবিধা হবে। ধরুন, ইন্ডিয়াতে এক লোক তার আমের বাগান রয়েছে তার বাগানে কাজ করার সমস্ত শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে সে একটি টোকেন ইন্টারনেটে মার্কেটে ছাড়লো। আর বলে দেওয়া হল যারা এই টোকেন আমাকে দেবে তাদেরকে ঐ সমপরিমাণ আম আমার কাছ থেকে দেওয়া হবে। অর্থাৎ এই টোকেন এর বিনিময় উক্ত লোকের কাছ থেকে আম কেনা যাবে। এভাবে টোকেন এর জন্ম হয়। বর্তমানে মার্কেটে আপনি যতগুলো টোকেন দেখবেন তার সবগুলোই ERC20 প্রটোকল এর উপর ভিত্তি করে ট্রানজেকশন হয়ে থাকে। আর এই ERC20 প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ইথারিয়াম কোম্পানি। অন্যদিকে ইথারিয়াম টেকনোলজি ডিপেন্ড করে থাকে ব্লকচাইন টেকনোলজির উপর যেটা আবার বিটকয়েনের প্রটোকল। সুতরাং তাহলে বুঝতেই পারছেন কিভাবে টোকেন কাজ করে। 


টোকেন এর সুবিধা এবং অসুবিধাঃ (Pros and Cons of Token)

টোকেন এর সুবিধা এবং অসুবিধা দুইটি রয়েছে। টোকেন ট্রানজাকশন এর সময় আপনার কাছ থেকে একটু বেশি পরিমাণ ফি কাটা হয়। যেটা বিটকয়েন ট্রানজেকশন এর ফি থেকেও অনেক বেশি। কারণ টোকেন গুলোর নিজস্ব কোনো ট্রানজাকশন প্রটোকল থাকে না এগুলো অন্য প্রটোকল এর উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। সুতরাং এই কারণে টোকেন ক্রয় বিক্রয় এবং ট্রেড করতে আপনাকে একটু বাড়তি ফি দিতে হয়। আরেকটি কথা আপনার জানার জন্য বলে দেই, ট্রানজেকশন ফি কে টোকেন এর ভাষায় গ্যাস ফি বলা হয়। আশাকরি টোকেন কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে আর এটির সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা ইতিমধ্যে পেয়েছেন।


এবার আলোচনা করবো টোকেন এর পরিচিতি নিয়েঃ



কিছু টোকেন পরিচিতিঃ (Some token names)

 

১. USDT ( ইউএসডিটি)

এটি এমন একটি টোকেন যেটির মার্কেট কখনো আপ ডাউন হয় না। এটিকে আবার কয়েনও বলা হয়। অর্থাৎএটি একটি স্টেবল বা স্থিতিশীল টোকেন বা কয়েন। যেমন আমাদের দেশের টাকা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস ডলার যেগুলোর মানের তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে প্রায় ৯৯ শতাংশ কয়েন আপ ডাউন হয়ে থাকে কিন্তু এটি একেবারে ভিন্ন একটি টোকেন। ট্রেড করার জন্য এই ইউএসডিটি কয়েন সবচেয়ে ভালো বলে কোন পর্যন্ত মনে করা হয়। এটি ইথারিয়াম ব্লকচেইন এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আপনি যখন বিটকয়েনে ট্রেড করবেন তখন যদি বিটকয়েন মার্কেট ডাউন হতে থাকে তখন আপনি আপনার বিটকয়েন এই ইউএসডিটি কয়েনে কনভার্ট করে স্টেবল বা স্থিতিশীল করে রাখতে পারবেন। ফলে আপনার লস হওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা থাকবে না। সামনে আমরা ট্রেড বিষয়ক এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। 



২. Link/Chainlink ( লিংক/চেইনলিংক)

ট্রেড করার জন্য আরেকটি ভালো কয়েন হচ্ছে Chainlink এটিকে আপনার ট্রেডিং লিস্টে সংযুক্ত করে রাখতে পারেন।


৩. Huobi token (হুবি টোকেন)

এটিও ইথারিয়াম ব্লকচেইন এর মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া আরও একটি ভালো মানের টোকেন। বর্তমানে এই টোকেন ট্রেডিংয়ে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে আপনার লিস্টে এটিকেও সংযুক্ত করে রাখতে পারেন। এই টোকেনটিও ইউএসডিটি টোকেনের মত একটি স্টেবল বা স্থিতিশীল টোকেন। এটির মার্কেট ও কখনো আপ ডাউন হয় না।


৪. Bat/ Basic Attention Token ( বেসিক এটেনশন টোকেন)

এটি খুবই বিশ্বস্ত এবং ভালো একটি টোকেন। কয়েনবেস বা বাইন্যান্স এর মত বড় বড় একচেন্জ প্লাটফর্মে এই টোকেনটি সংযুক্ত রয়েছে। এটির মাধ্যমে আপনি ট্রেড করে ভাল প্রফিট অর্জন করতে পারবেন। 


৫. Pax/Paxos Standard ( প্যাক্স/ প্যাক্সস)

এটিও একটি স্টেবল টোকেন। এটিও আপনি ইউএসডিটি এবং ইউএসডিসি টোকেন এর মত ব্যবহার করতে পারবেন। একটি কথা না বললেই নয় এই সকল স্টেবল বা স্থিতিশীল টোকেন দিয়ে আপনি কখনোই ট্রেড করতে যাবেন না। এর কারণ হচ্ছে যখন আপনার বিট কয়েনের মতো বড়-বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি গুলো ডাউন করবে তখনই কেবল স্টেবল কয়েন গুলো তে কনভার্ট করে আপনার অর্থ লস হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন। এই কয়েন গুলো শুধু এই কাজের জন্যই বেশি ব্যবহার করা হয়।


৫. Omg/ Omg Network ( ওএমজি/ওএমজি নেটওয়ার্ক)

ওএমজি খুব ভালো মানের একটি টোকেন। এটির মার্কেট আপ ডাউন হয়। এটির মাধ্যমে ট্রেড করে আপনি ভাল প্রফিট অর্জন করতে পারবেন। 


এছাড়াও আরো কিছু ভালো মানের টোকেন মার্কেটে রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:


  • ZRX
  • Snt/ Status
  • Kcs/Kocoin Shares
  • Matic/Matic Network
  • BitTorrent
  • Mana/Decentraland
  • GNT/Golem
  • Rcn/Ripio Credit Network
  • Data/ Streamr
  • Power/ Power ledger
  • DRGN/Dragonchain
  • HPT/Huobi pool token
  • WTC/Waltonchain
  • Poly/Polymath
  • Storj
  • FUN
  • Storm
  • GAS
  • Loom
  • WRX/Wazirx
  • CND
  • OGN/ Origin Protocol ইত্যাদি



আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি টোকেন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবং কিছু ভালো টোকেন এর পরিচয় জানতে পেরেছেন। পরবর্তী আর্টিকেলে এরকম কোন বিষয় নিয়ে আবার আলোচনা হবে ইনশাআল্লাহ।


সতর্কীকরণঃ এই ওয়েব সাইটের যাবতীয় তথ্য এবং ব্যাখ্যা সম্পূন্ন নিজ অভিজ্ঞতা এবং ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত সোর্সের আলোকে বিশ্লেষন করা হয়। কোথাও প্রয়োগ করার আগে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হল। 


আরো পড়ুনঃ কয়েন কিভাবে চিনবেন বা কোন কয়েনটি সবচেয়ে বেশি লাভজনক? 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url