মানি ম্যানেজমেন্ট: ধনী বা সম্পদ বৃদ্ধি করতে চাইলে এই ৫টি জিনিসে কখনোই অর্থ ব্যয় করবেন না।

মানি ম্যানেজমেন্ট: ধনী বা সম্পদ বৃদ্ধি করতে চাইলে এই ৫টি জিনিসে কখনোই অর্থ ব্যয় করবেন না।


মানি ম্যানেজমেন্ট (Money Management)

মানি ম্যানেজমেন্ট হলো অর্থ সম্পর্কিত বিষয়গুলি পরিচালনা করার একটি পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া। মানি ম্যানেজমেন্ট এর মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সমস্যা সমাধান করা হয় এবং আর্থিক সুস্থতার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি আর্থিক পরিচালনার একটি বিশাল ক্ষেত্র, যা সম্পর্কিত বিষয়গুলি উপস্থাপন করে যেমন বাজেটিং, মূলধন ব্যবস্থাপনা, আইনগত ব্যবস্থাপনা, নির্ণয় গ্রহণ, আর্থিক পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি। এর মাধ্যমে ব্যক্তি তার আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা পায়।


মানি ম্যানেজমেন্টের উদ্দেশ্য:

- আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা

- ঋণ মোকাবিলা করা

- সঞ্চয় বাড়ানো 

- সঠিক বিনিয়োগের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা

- অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন

- সম্পদ বৃদ্ধি করা

- অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করা


এভাবে ভালো মানি ম্যানেজমেন্ট দিয়ে ব্যক্তিরা তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা পান।


আপনি যদি ধনী না হন, তাহলে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে কীভাবে ধনী হতে পারেন তা আপনি চিন্তা করতে পারেন। দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ গড়ে তোলার জন্য সাধারণত আপনার অর্থ ব্যবস্থাপনায় বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন যেমন নিয়মিত বিনিয়োগ করা এবং কোন ঋণ থাকলে সেটা পরিশোধে অগ্রাধিকার দেওয়া।  


এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী মূল্য না থাকা কোন জিনিসে অর্থ ব্যয় করা অন্তর্ভুক্ত নয়। কোন ক্রয় আপনাকে ধন গড়তে বাধা দেয় সেটা কীভাবে জানবেন? এখানে একজন অর্থ পরিকল্পনাবিদ যে ব্যয়গুলো আপনার ধনী হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে সেগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।


ধনী বা সম্পদ বৃদ্ধি করতে চাইলে এই ৫টি জিনিসে কখনোই অর্থ ব্যয় করবেন না। 


বিলাসবহুল জিনিসপত্র - ডিজাইনার পোশাক, বাহ্যিক ঘড়ি, পুরাতন গাড়ি এবং অন্যান্য উচ্চ মূল্যের প্রতিপাদক জিনিসপত্র। এসব ক্রয় আপনার অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। যেমন, আপনি যদি ১০,০০০ টাকার একটি ডিজাইনার স্মার্ট ঘড়ি ক্রয় করেন, তাহলে সেই টাকা দিয়ে আপনি স্টক বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারতেন, যা দীর্ঘমেয়াদে আপনার টাকা বাড়িয়ে তোলার সুযোগ করে দিত। ফ্যান্সি কার ক্রয় বা মহাগীর্ব হোটেলে অবস্থান এড়িয়ে চলুন যদি আপনার অর্থনৈতিক অবস্থা সেটা সামলাতে না পারে।


অস্ফূর্ত ক্রয় - লটারি টিকিট বা কোনও উদ্বেগজনক মুহূর্তে ক্রয় করা জিনিস, যেমন কর্মস্থলে কঠিন দিনের পর শপিং করা। এগুলি সময়ের সাথে সাথে আপনার অর্থনীতিতে ক্ষতি করে। যেমন, আপনি যদি কঠিন একটি দিনের পর অস্ফূর্তভাবে অনলাইনে ২০,০০০ টাকার দামের একটি ফোন কিনে ফেলেন, তাহলে সেই অর্থ আপনার ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা উত্তম বিকল্প হতো।


ভাড়া - বাসস্থান ভাড়া করা ক্রয়ের চেয়ে কম খরচসাপেক্ষ। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি বেশি খরচসাপেক্ষ হতে পারে। আসলের জিনিস ক্রয় বা ভাড়াটে প্রপার্টিতে বিনিয়োগ করে আপনার সম্পদ বাড়ান। যেমন, আপনি যদি প্রতি মাসে 20,000 টাকা ভাড়া দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে সেই টাকা দিয়ে হোম লোনের আওতায় একটি বাসস্থান ক্রয় করা উত্তম বিকল্প হতো।


উচ্চ সুদের ঋণ - ক্রেডিট কার্ড ঋণ, পে-ডে লোন বা ব্যক্তিগত ঋণে উচ্চ সুদ পরিশোধ করা আপনার সম্পদ গড়ার চেষ্টাকে দ্রুত ক্ষয় করে দেয়। এসব এড়াতে বাজেট তৈরি করুন এবং দ্রুততম সময়ে ঋণ শোধ করুন। যেমন, আপনি যদি ক্রেডিট কার্ডে ঋণ নিয়ে থাকেন যার সুদের হার বার্ষিক 20%, সেক্ষেত্রে সেই উচ্চ সুদের ঋণ যত তাড়াতাড়ি শোধ করা ভালো।


মূল্যবান আর্থিক পণ্য - এনুইটি, ওয়োল লাইফ ইনস্যুরেন্স বা উচ্চ ফি মিউচুয়াল ফান্ড উচ্চ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু বেশি ফি দিয়ে আপনার রিটার্ন কমায়। বদলে ইন্ডেক্স ফান্ড বা ইটিএফ বিবেচনা করুন। যেমন, আপনি যদি একটি ওয়োল লাইফ ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়ামে মাসে 10,000 টাকা খরচ করে থাকেন, সেটার বদলে সেই অর্থ ইন্ডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করার চিন্তা করা যেতে পারে যা কম খরচে উপার্জন করার সুযোগ করে দেয়।


সংক্ষেপে বলা যায়, দীর্ঘমেয়াদে সম্পদ গড়ে তোলার জন্য বিলাসবহুল ক্রয়, অস্ফূর্ত ক্রয়, বেশি ভাড়া, উচ্চ সুদের ঋণ এবং ব্যয়বহুল আর্থিক পণ্য এড়িয়ে চলা উত্তম। বরং বিনিয়োগ, ঋণ পরিশোধ এবং খরচ নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেওয়া দরকার। এভাবে করলে দীর্ঘমেয়াদে সম্পদ গড়ে তোলা সম্ভব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url