ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা কী এবং কীভাবে কাজ করে, এটি থেকে থেকে ইনকাম করার সিক্রেট উপায় জানুন। Cryptocurrency Business
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা বলতে বিটকয়েন, ইথেরিয়াম এর মতো ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যবসায়িক কার্যকলাপ ও মডেলগুলোকে বোঝায়। ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা সম্পর্কিত প্রস্তাবনাগুলি বা কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত লাভের একটি উদ্যোগ। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করার জন্য ব্লকচেইন ও ক্রিপ্টোগ্রাফি প্রযুক্তি ব্যবহার হয়, যা লেনদেনের নিশ্চিতকরণ, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রযুক্তি নেটওয়ার্ক প্রক্রিয়া সমর্থন করে।ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা বৃদ্ধি পায় এই ধারণার উপর ভিত্তি করে যে, এটি নতুন এবং সাধারণ ব্যক্তিরা মূল্য অর্জনের জন্য একটি সাদা বার্তা প্ল্যাটফর্ম প্রদান করতে পারে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা কীভাবে কাজ করে?
- ট্রেডাররা বাজার বিশ্লেষণ করে কম দামে ক্রয় ও বেশি দামে বিক্রয় করে লাভ করে।
- মাইনাররা কম্পিউটারে লেনদেন যাচাই করে নতুন ক্রিপ্টো পুরস্কার হিসেবে পায়।
- এক্সচেঞ্জগুলো ক্রেতা-বিক্রেতাদের মিলিয়ে দেয় এবং লেনদেনের উপর ফি আদায় করে।
- ওয়ালেটগুলো ব্যক্তিগত কী নিরাপদে সংরক্ষণ করে এবং লেনদেনের জন্য ফি নেয়।
- ব্যবসায়ীরা ক্রিপ্টোতে পেমেন্ট গ্রহণ করে ফিয়াট কারেন্সি এড়ায়।
- ঋণদাতারা ব্যাংকের মত সুদে ক্রিপ্টো সম্পদ ঋণ দেয় এবং সুদ আয় করে।
- পরামর্শকরা ফি বিনিময়ে গ্রাহকদের ক্রিপ্টো নিয়ে পরামর্শ দেয়।
- ডেভেলপাররা ক্রিপ্টো ভিত্তিক অ্যাপ তৈরি করে ফি আয় করে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করে ইনকাম:
- ট্রেডিং (Trading) -ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম চলমান বাজারে প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়। এই দাম পরিবর্তন থেকে লাভ করার জন্য ট্রেডাররা ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনা-বেচা করে থাকে। যেমন বিটকয়েন বা ইথেরিয়ামের দাম কম থাকা অবস্থায় সেগুলো কিনে রাখা এবং দাম বেড়ে গেলে বিক্রি করে লাভ করা।এজন্য ট্রেডারদের প্রয়োজন হয় বাজার এবং টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের গভীর জ্ঞান। তাছাড়া ভবিষ্যত দাম সম্পর্কে পূর্বাভাস করা এবং ঝুঁকি মেনে চলাও জরুরি। অভিজ্ঞ ট্রেডাররাই ট্রেডিং দিয়ে ভালো লাভ করতে পারে।সামগ্রিকভাবে, ক্রিপ্টো ট্রেডিং হলো চলমান দাম বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত সময়ে ক্রিপ্টো কেনা-বেচা করে লাভ করার প্রক্রিয়া। যা ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার অন্যতম একটি মাধ্যম।
- মাইনিং (Mining) -ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং হলো ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে লেনদেন সম্পাদন ও যাচাইকরণের মাধ্যমে নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি তৈরি করার প্রক্রিয়া। এর জন্য মাইনাররা বিশেষ কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে।মাইনিংয়ের মাধ্যমে লেনদেনগুলো যাচাই করা হয় এবং পুরস্কার হিসাবে নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি পাওয়া যায়। তবে এর জন্য বড় পরিমাণ বিদ্যুত খরচ লাগে এবং শক্তিশালী কম্পিউটিং রিগ লাগে। তাই মাইনিং দিয়ে লাভ করতে গিয়ে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা জরুরি।সামগ্রিকভাবে, ক্রিপ্টো মাইনিং হলো ব্লকচেইনে লেনদেন সম্পাদনের মাধ্যমে নতুন ক্রিপ্টো তৈরি করার প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মাইনাররা ইনসেন্টিভ হিসাবে নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি অর্জন করে।
- স্টেকিং এবং ইয়োগ ফার্মিং (Staking and Yield Farming) - স্টেকিং হলো ক্রিপ্টোকারেন্সি হোল্ড করে রাখার প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করা যায়। একজন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি হোল্ড করে থাকেন এবং সেগুলো কোন প্ল্যাটফর্মে স্টেক করে রাখেন, তাহলে সেই প্ল্যাটফর্ম থেকে ইনসেন্টিভ হিসাবে অতিরিক্ত টোকেন পান। অন্যদিকে, ইয়ীল্ড ফার্মিং হলো ডিফাই এর মতো প্ল্যাটফর্মে স্টেকিং করার মাধ্যমে অতিরিক্ত রিটার্ন অর্জনের প্রক্রিয়া। এর ফলে ব্যবহৃত পূঁজির চাহিদা কমে যায় এবং উপার্জন বেড়ে যায়। সংক্ষেপে, স্টেকিং ও ইয়ীল্ড ফার্মিং দিয়ে ক্রিপ্টো হোল্ড করে থাকা মাত্রই অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ তৈরি করে, যা ক্রিপ্টো ইনভেস্টরদের জন্য সুবিধাজনক।
- পরিষেবা তৈরি ও অফারিং (Creating and Offering Services) - ক্রিপ্টোকারেন্সির পরিষেবা তৈরি ও অফারিং করে আয় করার কিছু উপায়: প্রথমত, ক্রিপ্টো বিনিয়োগ, ট্রেডিং এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে পরামর্শ সেবা দিয়ে ফি আয় করা যেতে পারে। এছাড়া ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম বা ওয়ালেট তৈরি করে ব্যবহারের বিনিময়ে ফি নেওয়া যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, ক্রিপ্টো পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি করে প্রতিটি লেনদেনের উপর থেকে কমিশন আয় করা যেতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার ক্রিপ্টো সম্পর্কিত প্রশিক্ষণও দিয়ে ফি আয় করা যেতে পারে। তৃতীয়ত, ক্রিপ্টো মার্কেট রিসার্চ এবং ডাটা অ্যানালিটিক্স সার্ভিস দেওয়া যেতে পারে যার বিনিময়ে ফি নেওয়া যেতে পারে। এই ধরণের বিভিন্ন পরিষেবা দিয়ে ক্রিপ্টোর উপর ভিত্তি করে ব্যবসা করা যেতে পারে এবং আয় করা যেতে পারে। অনেক বেকার তরুণ তরুণী এই পন্থা কাজে লাগিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করে যাচ্ছে এবং তারা স্বাবলম্বী ও হচ্ছে।
- টোকেন সেল ও প্রি-সেল (Token Sales and Pre-Sales): ক্রিপ্টোকারেন্সির টোকেন সেল ও প্রি-সেলে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আয় করা যেতে পারে: প্রথমত, নতুন ক্রিপ্টো প্রকল্পের টোকেন সেল বা প্রি-সেল চলাকালীন সময়ে সেগুলো ক্রয় করা যেতে পারে। কারণ এসময় টোকেনগুলোর দাম অনেক কম থাকে। পরে এক্সচেঞ্জে লিস্ট হলে দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ হয়। হোয়াইটপেপার বা প্রজেক্ট রোডম্যাপ পড়ে ভবিষ্যতে দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকা প্রকল্পগুলো বেছে নিতে হবে। অল্প পূঁজিতে বেশি টোকেন পাওয়ার সুযোগ থাকায় এই পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করা হয়। তবে ঝুঁকিও বেশি থাকে। এভাবে টোকেন সেল ও প্রি-সেলে অংশগ্রহণ করে ভবিষ্যতে দাম বাড়লে লাভ করা যেতে পারে। তবে ঝুঁকিও রয়েছে।
- এক্সচেঞ্জ (Exchange) - ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ তৈরি করে আয় করা যেতে পারে নিম্নরূপভাবে: প্রথমত, ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য একটি অনলাইন ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যেতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্য ট্রেডিং পেয়ার সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।দ্বিতীয়ত, প্রতিটি লেনদেনের উপর থেকে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হারে ফি আদায় করা যেতে পারে যা থেকে আয় হয়। তৃতীয়ত, বেশি ব্যবহারকারী এবং লেনদেন আকর্ষণ করতে বিভিন্ন প্রচার করা যেতে পারে যাতে আয় বাড়ে। বাংলাদেশ বর্তমানে অনেকে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ সাইট কাজে লাগিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করে চলছে, এর মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক ডলার ও দেশী মুদ্রা উপার্জন করতে পারছে। তবে এই ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই স্থানীয় সরকার থেকে অনুমতি নিতে হবে। এভাবে নিজস্ব ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে লেনদেন থেকে কমিশনের মাধ্যমে আয় করা যায়।
- ওয়ালেট (Wallet) - ব্যবহারকারীদের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি সংরক্ষণ এবং পরিচালনার ডিজিটাল ওয়ালেট প্রদান; লেনদেন ফি আদায়।
- পেমেন্ট (Payment)- ক্রিপ্টো পেমেন্ট গ্রহণ করে আয় করা যেতে পারে নিম্নরূপভাবে: প্রথমত, পণ্য বা পরিষেবার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছ থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে পেমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।দ্বিতীয়ত, ক্রিপ্টো পেমেন্ট গেটওয়ে বা প্রসেসরের সাহায্য নিতে হবে যাতে সুগমভাবে পেমেন্ট গ্রহণ করা যায়। তৃতীয়ত, ক্রেডিট কার্ডের তুলনায় ক্রিপ্টো পেমেন্টে ২-৪% হারে ফি সাশ্রয় হওয়ায় লাভ হয়।এভাবে পণ্য বা পরিষেবার মূল্য ক্রিপ্টোতে গ্রহণ করে ক্রেডিট কার্ড ফি এড়িয়ে আয় বাড়ানো যেতে পারে।
- ঋণদান (Lending) - ক্রিপ্টোকারেন্সির ঋণদান ব্যবসা করে আয় করা যেতে পারে নিম্নরূপভাবে: প্রথমত, ক্রিপ্টো ঋণদাতা হিসাবে নিজের ক্রিপ্টো হোল্ডিংসের একটি অংশ ঋণের জন্য রাখা যেতে পারে। একই সাথে ঋণগ্রহীতাদের খোঁজ করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে সুদ আদায় করা হয় যা ঋণদাতার জন্য আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করে। তৃতীয়ত, প্রতিষ্ঠিত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিরাপদে এবং কার্যকর ভাবে ঋণদান পরিষেবা প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে ক্রিপ্টোতে ঋণদানের মাধ্যমে হোল্ডিংস থেকে অতিরিক্ত আয় করা যায় যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়। তবে ঝুঁকিও রয়েছে। আর এটি ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণ হারাম বলা হয়েছে।
- পরামর্শ প্রদান (Advisory Services) - ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ, ট্রেডিং, সুরক্ষা ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন। এর জন্য ফি গ্রহণ করতে পারেন। আইন, রেগুলেশন এবং কর বিধি সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারেন যাতে গ্রাহকেরা নিরাপদে ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করতে পারে।টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস সহায়তায় সঠিক সময়ে ক্রয়-বিক্রয়ের পরামর্শ দিতে পারেন। এভাবে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে ক্রিপ্টো থেকে আয় করা যায়। দক্ষতা বাড়লে পরামর্শ ফিও বাড়ে।
- ইনভেস্টিং (Investing): দীর্ঘমেয়াদি লাভের জন্য বিটকয়েন, ইথেরিয়াম এবং অন্যান্য জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। নতুন ক্রিপ্টো প্রজেক্টস এবং আইসিও-র টোকেন সমূহে বিনিয়োগ করা যেতে পারে যার ভবিষ্যত উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগের আগে ভালভাবে গবেষণা করে ঝুঁকি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা দরকার। এভাবে ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় প্রজেক্টসমূহে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে ক্রিপ্টো থেকে আয় করা যেতে পারে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় যে বিষয় গুলো সবার আগে মাথায় রাখা উচিত।
ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজার খুবই অস্থির এবং ঝুঁকিপূর্ণ। সতর্কতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে। প্রথমে কম পরিমাণ দিয়ে শুরু করা ভালো এবং ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। বিভিন্ন ক্রিপ্টো কারেন্সিতে বিনিয়োগ করা উচিত, একটিতেই সবকিছু লাগানো ঠিক নয়। ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম সঠিকভাবে বাচাই করে নেওয়াটাও জরুরী, কিভাবে
ট্রেডিং প্লাটফর্ম বেছে নিবেন তা নিয়ে আমরা আগের আর্টিকেল গুলোয় বলেছি, চাইলে পড়ে নিতে
পারেন। ক্রিপ্টো ব্যবসায় নিজের টাকা নিজেই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। কোন তৃতীয় পক্ষের কাছে টাকা রাখা ঠিক নয়। এছাড়াও ক্রিপ্টোর প্রতি আইন ও নিয়মাবলী সম্পর্কে জানা জরুরি। সর্বশেষ
এই ব্যবসায় চালানোর আগে ভালো করে গবেষণা ও প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত।
আমি নতুন হিসেবে ক্রিপ্টো কারেন্সি ব্যবসায় কোন ক্রিপ্টো কারেন্সি গুলোতে
বিনিয়োগ করা উচিত?
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নিরাপদ কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি হল:
- বিটকয়েন (Bitcoin) - এটি সবচেয়ে প্রচলিত এবং মূল্যবান ক্রিপ্টোকারেন্সি।
- ইথেরিয়াম (Ethereum) - এটি বিটকয়েনের পরেই সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি। এর স্মার্ট কন্ট্রাক্টের ব্যবহার বেশি
- রিপল (Ripple) - এটি দ্রুত লেনদেনের জন্য জনপ্রিয়। ব্যাংক লেনদেনে ব্যবহৃত হয়।
- লাইটকয়েন (Litecoin) - এটি দ্রুত ও কম খরচে লেনদেনের জন্য ভালো।
- বিন্যান্স কয়েন (Binance Coin) - বিন্যান্স এক্সচেঞ্জ দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় নিরাপদ।
- Cardano - এটি proof-of-stake কনসেনসাস প্রক্রিয়া ব্যবহার করে এবং একটি উন্নত প্রযুক্তিগত প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্যে এগিয়েছে।
- XRP - এটি দ্রুত এবং কম খরচে আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্ভব করে। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে জনপ্রিয়।
- Matic (Polygon) - এটি Ethereum এর স্কেলিং সমাধান হিসাবে কাজ করে এবং দ্রুত ও কম খরচে লেনদেন সম্ভব করে।
এগুলি সবাই ভালো প্রকল্প এবং বিনিয়োগে বিবেচনাযোগ্য।তবে কোনটি ভালো সেটা নির্ভর করে আপনার লক্ষ্য, ঝুঁকি মেনে নেওয়ার ক্ষমতা এবং অভিজ্ঞতার উপর। বিভিন্নটিতে বিনিয়োগ করা নিরাপদ হবে।
নতুন হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় আমার জন্য কোন কয়েনটি সবচেয়ে ভাল হবে?
আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ক্রিপ্টোকারেন্সি নির্বাচন করা কিছু ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে:
প্রথমত জানতে হবে আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য কী? দীর্ঘমেয়াদী বা ক্রমবর্ধমান সম্পদ গড়ে তোলা নাকি দ্রুত লাভের জন্য? আপনি কতটা ঝুঁকি নিতে পারেন? উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প নাকি নিরাপদ বিনিয়োগ পছন্দ করেন? আপনার অভিজ্ঞতা কী? নতুন ক্রিপ্টো ব্যবহারকারী হলে সহজে ব্যবহারযোগ্য উপরে উল্লেখ করা যে কোন কয়েনই ভাল। তবে নতুন হিসেবে
আমি বলবো বিটকয়েন বা ইথেরিয়াম ইআরসি-২০ কয়েন গুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে জেনে রাখুন
যে ক্রিপ্টো নিয়ে ব্যবসা করতে যাবেন তার আগে ক্রিপ্টোটির প্রযুক্তি, দল, রোডম্যাপ সম্পর্কে পর্যাপ্ত গবেষণা করুন। এই ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। পরামর্শ নিতে পারেন অভিজ্ঞ ক্রিপ্টো বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় কোন আইন ও নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে?
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় নিম্নলিখিত আইন ও নিয়মাবলী মেনে চলা উচিত:
১)
ক্রিপ্টোকারেন্সি রেগুলেশন - দেশের ক্রিপ্টো নিয়ন্ত্রণাবলী মেনে চলা উচিত।
বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার উপর কিছু
শীতলতা দেখাচ্ছে। তবে এর মানে এই নয় যে এটা আমাদের দেশে বৈধ। আপনি এরকম কোণ ব্যবসায়
নামার আগে অবশ্যই স্থানীয় সরকার থেকে অনুমতি নিবেন।
২)
KYC নিয়মাবলী - গ্রাহকদের পরিচয় যাচাই করতে হবে।
৩)
AML আইন - অর্থ প্রতারণা এবং ট্রেডিং এ জড়িত নয় কিনা তা নিশ্চিত করা।
৪)
ট্যাক্স আইন - ক্রিপ্টো লেনদেন থেকে আয়ের উপর কর পরিশোধ করা।
৫)
গোপনীয়তা নীতি - গ্রাহকের তথ্য গোপন রাখা উচিত।
৬)
নিরাপত্তা - নিরাপদ পদ্ধতিতে ক্রিপ্টো সংরক্ষণ করা।
এই সব আইন মেনে চললেই ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা করা যাবে নিরাপদের সাথে।
উপসংহার
ক্রিপ্টোকারেন্সির
উত্থান ও বিকাশ সত্ত্বেও
এখনও এটি একটি নতুন
ও উন্নয়নশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। তবে
ক্রিপ্টোর চঞ্চলতা ও বৃদ্ধির সম্ভাবনা
ব্যবহার করে এখান থেকে
ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা তে ট্রেডিং, মাইনিং, ইনভেস্টিং থেকে শুরু করে নতুন প্রযুক্তি ভিত্তিক পরিষেবা, প্ল্যাটফর্ম তৈরি, পরামর্শ প্রদান এবং অন্যান্য কিছু মডেল দিয়েও আয় করা সম্ভব। সঠিক ধরণের ব্যবসায়িক মডেল বাছাই, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং সচরাচর পরিস্থিতির প্রতি লক্ষ্য রেখে কাজ করলে ক্রিপ্টো থেকে সফলভাবে উপার্জন করা সম্ভব।