ব্লকচেইন টেকনোলজি বিশ্বকে পাল্টে দেয়া এক যুগান্তকারী আবিস্কার। এই টেকনোলজি কি আর কাজ করেই বা কিভাবে? | Blockchain technology details in bangla

ব্লকচেইন টেকনোলজি বিশ্বকে পাল্টে দেয়া এক যুগান্তকারী আবিস্কার। এই টেকনোলজি কি আর কাজ করেই বা কিভাবে? | Blockchain technology details in bangla

আমরা যদি বিগত বছরে বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকাই তাহলে এখানে বড় যে সমস্যাটি দেখতে পাবো সেটা হচ্ছে ভোটিং পদ্ধতি। বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশে বর্তমানে ভোটিং এর জন্য ইভিএম মেশিন ব্যবহার করে।


একটু চিন্তা করে দেখুন ইলেকশনে যখন আপনি ভোট দিতে যাচ্ছেন তখন আংগুলের একটি চাপ দিয়ে আপনার ভোটটি নিশ্চিত করছেন কেমন হতো যদি এরকম একট পদ্ধতি থাকতো যেখানে আপনি ভোট দিচ্ছেন আর সেটি গণনা হচ্ছে কিনা তা আপনি সহ সবাই সরাসরি দেখছে তাহলে ব্যাপারটাই অন্যরকম হত তাই না? হ্যাঁ এরকম একটি পদ্ধতি তৈরি করা সম্ভব একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আর সেটি নাম হচ্ছে ব্লকচেইন টেকনোলজি। যে বিটকয়েন এর নাম আপনারা শুনে থাকেন তা ব্লকচেইন টেকনোলজির উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে। অনেকেই এখন মনে করছে এই ব্লকচেইন টেকনোলজি সম্পূর্ণ ভোটিং পদ্ধতিকেই পরিবর্তন করে দিতে পারে। যেখানে থাকবে না কোন ভোট দেওয়া বা নেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায়। তাহলে চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক এটি কিভাবে কাজ করে আর এটির সাথে বিটকয়েনের কিভাবে সম্পর্ক রয়েছে!


ব্লকচেইন আসলে কি? (What is Blockchain?)

ব্লকচেইন হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করা হয় ডিসেসেন্ট্রালাইজড নিয়মে। অর্থাৎ যে তথ্যের নিয়ন্ত্রণ কারো কাছে থাকবে না। নিয়ন্ত্রণহীন তথ্যগুলো জমা রাখার কাজই হচ্ছে এই ব্লকচেইন টেকনোলজির কাজ।

উদাহরণ হিসেবে যদি বলি ধরুনঃ বাংলাদেশ ব্যাংক এক হাজারের একটি নোট ছাপিয়েছে আর সেটি বাজারে ছেড়েছে এবং আমরা সেটি ব্যবহার করছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এখানে নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে এই নোটটির মান একহাজার টাকা। ১০০১ বা ১০০২ টাকা নয়। নোটের উপর লেখাও রয়েছে যে এটি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের নিশ্চয়তা প্রদান কারী নোট হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ আপনি চাইলে এই এক হাজার টাকার নোট দিয়ে সমপরিমাণ পণ্য নিতে পারবেন। তার মানে এটা বুঝাচ্ছে যে বাংলাদেশ ব্যাংক চাইলে এইা নোটটি নিজেদের ইচ্ছামত পরিবর্তন করতে পারে বা আরও যত ইচ্ছা তত নোট ছাপাতে পারে। অর্থাৎ সারাবিশ্বে যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই এক হাজারে নোট রয়েছে বা আরো যে সকল নোট রয়েছে তার সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের এই কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কিন্তু অপর দিকে আমরা যদি বিটকয়েন এর কথা চিন্তা করি তাহলে সেটি ব্লকচেইন টেকনোলজির উপর নির্ভরশীল। আর এই টেকনোলজি এমনভাবে তথ্য সংগ্রহ বা আদান-প্রদান করে যার নিয়ন্ত্রণ তৃতীয় কোনো ব্যক্তির কাছে থাকে না।


তাহলে এই ব্লকচেইন টেকনোলজি কাজ করে কিভাবে? (How does Blockchain technology work?)

যদি একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেন তাহলে তথ্য সংগ্রহ করার অনেক মাধ্যম আমরা দেখতে পারি যেমন আপনি কোন খাতায় লিখে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন বা কম্পিউটারে কোন এক্সেল শীট বা ওয়ার্ড প্যাডে আপনার তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। এক্সেল শিট বা ওয়ার্ডে যখন আপনি তথ্য সংগ্রহ করেন তখন সেটি টেবিল আকারে থাকে বা আপনি যেকোন তথ্য সংরক্ষণ করতে গেলে সেটিকে টেবিল বানিয়ে করতে হয় তেমনি ভাবে ব্লকচেইনও যদি আপনি কোন তথ্য রাখেন সেটি ব্লক আকারে তৈরি হয়। আর ব্লকচেইনে তথ্য সংরক্ষণ করা হয় এই ব্লকের মাধ্যমে। প্রত্যেকটি ব্লক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস দিয়ে তৈরি হয়। আর সে গুলো হলঃ 


  1. ডাটা ( Data)
  2. হ্যাশ ( Hash)
  3. হ্যাশ অব দি প্রিবিয়াস ব্লক ( Hash of the previus block)


১) ডাটা ( Data)

এখানে যে তথ্যগুলো সংগ্রিহত হয় সেগুলো হচ্ছে আপনি কাউকে যদি কোন তথ্য পাঠাতে চান তাহলে এখানে আপনার ঠিকানা সংরক্ষিত থাকে আর যাকে পাঠাবেন তার ঠিকানা সংরক্ষিত থাকবে এবং যে পরিমাণ তথ্য বা অ্যামাউন্ট পাঠাবেন সেটি সংরক্ষিত থাকে। যেমনটা আমরা ইমেইল পাঠানোর সময় দেখে থাকি অনেকটা এরকমঃ


To: mrxyz@zyz

From: msxyz@xyz

Amount: 50


২) হ্যাশ ( Hash) ঃ

এটি হচ্ছে প্রত্যেকটি ব্লকের ফিঙ্গারপ্রিন্ট। আমাদের যেরকম ফিঙ্গারপ্রিন্ট রয়েছে এবং সেটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে বা তথ্য নেওয়ার সময় ব্যবহার করতে হয় তেমনি ব্লকচেনেইও এরকম একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট রয়েছে আর সেটাকে বলা হয় হ্যাশ। এই ফিঙ্গারপ্রিন্ট একটি কোডের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় আর তা দেখতে অনেকটা এরকমঃ

e37fh375hdofiryGFDOjhds38744hdsgh

এই কোডের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ব্লক কে ইউনিক ভাবে আইডেন্টিফাই বা সনাক্ত করা যায়।


৩) হ্যাশ অব দি প্রিবিয়াস ব্লক  (Hash of the previous block)

এটির কাজ হচ্ছে প্রত্যেকটি ব্লক তার পেছনের ব্লকের হ্যাশ বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংরক্ষণ করে রাখবে। এতে যখন তথ্য বা ডেটা ট্রান্সফার হবে তখন একে একে প্রত্যেকে বুঝতে পারবে যে তথ্য বা ডাটা গুলো কোথায় থেকে কোথায় যাচ্ছে বা যাবে। আমরা যদি উদাহরণ হিসেবে একটি ছবি দেখি তাহলে দেখতে পারব, এখানে প্রথম যে ব্লক রয়েছে সেটিরর দুইটি ইউনিট কোড রয়েছে একটি হচ্ছে হ্যাশ কোড  আরেকটি হচ্ছে প্রিবিয়াস হ্যাশ। দ্বিতীয় ব্লক এর দিকে যদি লক্ষ্য করে তাহলে দেখতে পাব এটিরও নিজস্ব একটি হ্যাশ কোড রয়েছে পাশাপাশি এটি তার পূর্ববর্তী হ্যাশ কোড সংরক্ষন করে রেখে দিয়েছে তার নিজের ব্লকে। এভাবে আমরা যদি পরপর তৃতীয় এবং চতুর্থ ব্লক এর দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব প্রত্যেকেরই নিজস্ব একটি হ্যাশ কোড রয়েছে পাশাপাশি এটি তার পূর্ববর্তী ব্লকের হ্যাশ বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংরক্ষন করে রেখে দিয়েছে।

 

এভাবেই একটি ব্লক অপর একটি ব্লগের সাথে সম্পূর্ণ ভাবে সংযুক্ত থাকে। আপনি যদি এখানে যেকোনো একটি ব্লকের ডাটা পরিবর্তন করতে চান বা পরিবর্তন করে দিন তাহলে সম্পূর্ণ সিস্টেমটি ফেইলড হয়ে যাবে। ধরুন, আপনি নাম্বার ২ এর তথ্য পরিবর্তন করতে চাইছেন এর ফলে এটির হ্যাশ কোড বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাল্টে যাবে এর ফলে এর পরবর্তী হ্যাশ কোড বা ফিঙ্গারপ্রিন্টও পাল্টে যাবে। এভাবে পুরো সিস্টেম এর সবগুলো ব্লকের হ্যাশ বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাল্টে যাবে অর্থাৎ আপনি যে তথ্য বা অ্যামাউন্ট পাঠাতে চাচ্ছেন সেটি আর উত্তর ঠিকানায় পৌছাবেনা যেখান থেকে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল সেখানেই ফিরে আসবে।

আর এই কারনেই ব্লকচেইন এ তথ্য পরিবর্তন করা একেবারেই অসম্ভব একটি কাজ।  কারণ একবার যে কোন তথ্য এই ব্লকে ঢুকে পড়লে তা পরিবর্তন করা আর সম্ভব নয়।


তাহলে এই ব্লক বা তথ্য গুলো নিয়ন্ত্রিত হয় কিভাবে? (How are these blocks or informations controlled?)

ব্লকচেইন এর তথ্য নিয়ন্ত্রণ এবং এটিকে আরো নিরাপদ করার আরও একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে এটির ডিসেন্ট্রালাইজেশন। ব্লকচেইনের নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র একটি কম্পিউটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না বরং দুনিয়ার যতগুলো কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক রয়েছে আর যারা এই নেটওয়ার্কের মধ্যে প্রবেশ করেছে তারা সবাই এর নিয়ন্ত্রণকারী। এককথায় পৃথিবীতে যত কম্পিউটার এইপ্রজেক্ট এর মধ্যে রয়েছে তারা সবাই এই ব্লকচেইন নিয়ন্ত্রণ করে। এটি নিয়ন্ত্রণ করার কোন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক নেই। এটি পৃথিবীর সমস্ত কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। আর যারা এ ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়ে একে নিয়ন্ত্রন করার কাজে সাহায্য করছে তাদেরকে বলা হয় নোডস। আর এই নোডসের একটি অংশ হচ্ছে মাইনারস (Miners) । যখন ব্লকচেইনে নতুন কোনো তথ্য সংযুক্ত হয় তখন এই মাইনারদের কাজ হচ্ছে এই তথ্যকে ভেরিফাই বা যাচাই করা যে ব্যক্তি এই তথ্য সংযুক্ত করেছে সে সঠিকভাবে এই তথ্য সংযুক্ত করেছে কিনা বা এখানে কোন অসাধু উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে কিনা এই সবকিছুই ভেরিফাই বা যাচাই করা হয় মাইনারদের দ্বারা। যারা এই ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত তারা সবাই দেখতে পারবে যে কোন সময় কোন তথ্য বা ব্লক সংযুক্ত হচ্ছে। কোন তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন পড়ে না। আপনি আপনার নিজের কম্পিউটারে থেকেও এটি সরাসরি দেখতে পাবেন অর্থাৎ পৃথিবীর প্রায় সকলেই যারা এই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত তারা এটি দেখতে পাবে এবং ভেরিফাই করতে পারবে। এই জন্যই আমি প্রথমে বলেছিলাম যদি এই প্রযুক্তি আমাদের নির্বাচনে ভোটিং পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয় বা ইলেকশনে ভোট এর মাধ্যম ইভিএম এর বদলে ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় তখন সকলেই নিশ্চিত থাকতে পারবে যে তার ভোট গণনা করা হয়েছে নাকি হয়নি অর্থাৎ প্রায় সকলেই সরাসরি এটি দেখতে পারবে। এবং ব্যাক্তি নিজে তা সরাসরি দেখে ভেরিফাই করে নিতে পারবে।


এই টেকনোলজি ব্যবহার করে বর্তমানে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যারা আপনাকে ব্লকচেইন টেকনোলজি মাধ্যমে বিভিন্ন সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক তৈরি করে দেবে যেখানে আপনার তথ্য থাকবে সম্পূর্ণ নিরাপদ। তেমনি একটি উদাহরণ যদি আমরা কল্পনা করি তাহলে বিষয়টি আরো ক্লিয়ার হবে যেমনঃ এখন যদি বাংলাদেশে শিক্ষা বোর্ডের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সার্টিফিকেট একটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের মধ্যে সংরক্ষিত রাখে তাতে লাভ কি হবে? মনে করুন আপনার সামনে কোন ব্যক্তি নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট দাবি করছে কিন্তু আপনি তার ব্যাপারে সন্দিহান যে সে আসলেই ম্যাজিস্ট্রেট কিনা! বা এরকম কেউ যে নিজেকে ডাক্তার দাবি করছে কিন্তু আপনি তার সার্টিফিকেট দেখে নিশ্চিত হতে পারছেন না ভুয়া মনে করে যে সে সত্যিই ডাক্তার কিনা! ব্লকচেইন টেকনোলজি মাধ্যমে এই সমস্যাটি সমাধান হতে পারে যেখানে যেকোনো শিক্ষার্থী বা ব্যক্তিবর্গের সার্টিফিকেট বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড সংরক্ষন করবে আর যেকেউ সেখান থেকে তাঁর সার্টিফিকেট ভেরিফাই করে নিতে পারবে। আর এখানে কারো সার্টিফিকেট বা তথ্য পরিবর্তন করার সম্ভাবনা থাকবে না কেন পারবে না সেটি উপরে একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছি অর্থাৎ এটি থাকবে সম্পূর্ণ নিরাপদ একটি নেটওয়ার্ক যেখানে সবাই সবাইকে ভেরিফাই করে নিতে পারবে।

এখন আপনার হয়তো মনে একটি প্রশ্ন জেগেছে যে যখন সবাই যার যার তথ্য দেখতে পারছে ব্লকচেইন টেকনোলজির মধ্যে বা ব্লকচেইনের কপি প্রত্যেকটি কম্পিউটারের মধ্যে রয়েছে আর যখন আপনি কোন ইনফরমেশন সেখানে সংযুক্ত করবেন তাহলে তা প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত থাকবে না অর্থাৎ এটি যেহেতু সবাই দেখতে পাচ্ছে তাই আপনার তথ্যগুলো সব পাবলিক হয়ে যাচ্ছে তাহলে এরকম টেকনোলজির দরকারই বা কী যেখানে নিজেকে যথাযথভাবে রক্ষা করা সম্ভব নয়!

আসল কথা হচ্ছে ব্লকচেইন এ যে সকল তথ্য সংযুক্ত করা হয় তা শুধু নিরাপদই নয় বরং নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম। ব্লকচেইন টেকনোলজি সেটি কিভাবে করে চলুন জেনে আসি।

 

ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহার করে যে তথ্য সংরক্ষণ বা পাঠাবে তার একটি পাবলিক কী এবং একটি পাবলিক অ্যাড্রেস থাকে। আপনি এটাকে ইমেইল এড্রেস এবং ইমেইল এর গোপন নাম্বার হিসেবেও বুঝে নিতে পারেন। আপনি যখন আপনার ইমেইলে লগইন করেন তখন সেখানে আপনার ইমেইল দিতে হয় এবং পাসওয়ার্ড দিতে হয়। এখন ইমেইল কে পাবলিক কী যদি ধরেন তাহলে পাসওয়ার্ড হবে প্রাইভেট কী এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। এইরকম ব্লকচেইন টেকনোলজিতেও রয়েছে। আপনি যখন অন্যজনকে আপনার ইমেইল আইডি শেয়ার করেন তখন আপনি আপনার পাবলিক অ্যাড্রেস শেয়ার করছেন মানে আপনার প্রাইভেট কী শেয়ার করার বদলে পাবলিক অ্যাড্রেস শেয়ার করেন। আর এই পাবলিক এড্রেস হচ্ছে রান্ডম কিছু নাম্বারের কম্বিনেশন ছাড়া কিছুই নয়। যার ডিজিটগুলো দেখতে অনেকটা এরকমঃ 

0xhaye394skgds984g43ho3w9y34gksfgg3


একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝালে কেমন হয়?

আপনি যখন ভোট দিচ্ছেন তখন আপনি সেটি আপনার পাবলিক কী ব্যবহার করে বোর্ডে প্রদান করছেন যেখানে আপনার নাম পর্যন্ত প্রাইভেট বা ব্যক্তিগত থাকছে অর্থাৎ পৃথিবীর বাকি সবাই শুধু আপনার উক্ত পাবলিক এড্রেসটি দেখতে পাবে। এই অ্যাড্রেসের পেছনে কোন ব্যক্তি বা কে রয়েছে তার নাম কি? তার এড্রেস, তার বয়স কি তা বের করা কখনও সম্ভব নয়। তাই আপনার নাম বা পাবলিক ইমেইল দেখার কোনো সম্ভাবনাই থাকছে না।

আমরা যদি আমাদের সরকারি ওয়েবসাইট গুলোর দিকে তাকাই তাহলে প্রতিবছর উক্ত সাইটগুলোতে আমরা বিভিন্ন সমস্যা দেখতে পাই যেমন অনেক সময় সাইট গুলো সার্ভার ডাউন বা অতিরিক্ত ট্রাফিকের জন্য সাইটে ঢুকে যাচ্ছে না এরকম সমস্যা গুলো প্রায় পরিণত হচ্ছে কিন্তু আমরা যদি আমাদের সরকারি ওয়েবসাইটগুলো ব্লক চেইন নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসি তাহলে এই সমস্যাগুলো চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। এখানে সবকিছু যেমন থাকবে সুরক্ষিত তেমনি নিরাপদ আর দেশের মানুষ এখান থেকে পাবে অগণিত সুফল।


সবই বুঝলাম কিন্তু যদি কেউ এই সিস্টেমে কোন ভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে চায় তখন এই সিস্টেম নিজ থেকে তা কীভাবে প্রতিরোধ করবে? (If someone wants to take a different approach to this system, how can it prevent it on its own?)

সালমান এবং ফারুক দুই বন্ধু। সালমান চাচ্ছে ফারুককে ৫০ বিটকয়েন পাঠাতে। ফারুকের একটি পাবলিক অ্যাড্রেস থাকবে সালমানের একটি পাবলিক অ্যাড্রেস থাকবে। তাই সালমানের এড্রেস থেকে ফারুকের এড্রেসে ৫০ বিটকয়েন যাবে। এখন এই নেটওয়ার্ক ট্রানজেকশন এ সংযুক্ত যে সকল কম্পিউটার রয়েছে বা আপনি বলতে পারেন মাইনাররা রয়েছে তারা এখন ভেরিফাই করবে যে সালমানের নিকট সত্যিই ৫০ বিটকয়েন আছে কিনা। এখন এখানে একটি কম্পিউটার  বলেছে সালমান ফারুকের কাছে নয় বরং তানিমের কাছে বিটকয়েন পাঠাবে।তখন এই নেটওয়ার্কে থাকা বাকি কম্পিউটার গুলো বলবে না আমরা তো দেখছি ফারুকের নিকট টাকা পাঠাচ্ছে। আর এজন্যই উক্ত কম্পিউটার গুলো সালমান থেকে ফারুক এর নিকট ৫০ বিটকয়েন পাঠিয়ে দিবে। আর যে কম্পিউটারটি তানিমের নিকট পাঠাতে বলেছিল তার কথা শুনবে না। যদি সত্যিই ব্লকচেইনে কোন ভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হয় তাহলে সারা বিশ্বজুড়ে ৫১% কম্পিউটার ব্যবহারকারী সম্মতির প্রয়োজন পড়বে। তাই বলা চলে এই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত পৃথিবীজুড়ে যদি কেউ ৫১% কম্পিউটারকে নিয়ন্ত্রন করে কোন ভিন্ন উপায় অবলম্বন করার চেষ্টা করে তাহলে সে এতে সফল হবে। কিন্তু বাস্তবিক কথা চিন্তা করলে বুঝা যায় বিশ্বজুড়ে ৫১%  কম্পিউটারগুলো নিয়ন্ত্রণ নিতে যাওয়া প্রায় অসম্ভব কারণ উক্ত কম্পিউটার গুলো সম্পন্ন ডিসেন্ট্রালাইজড অর্থাৎ একটি আরেকটির সাথে সংযুক্ত নয়। আপনি একটি কে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে যে আরেকটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারবেন তা প্রায় অসম্ভব। এভাবে আপনাকে সারা বিশ্বের প্রায় ৫১ শতাংশ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে যারা এই নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত, আর এই কাজ একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউ করতে পারবে বলে বিশ্বাস করা যায় না। তাহলে বুঝতেই পারছেন কেন ব্লক চেইন এতটা নিরাপদ!

তাই এ ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক যত বড় হবে বিশ্বজুড়ে কম্পিউটার এর সংখ্যা তত বাড়তে থাকবে বা যেসকল নেটওয়ার্ক এই ব্লকচেইনের এর সাথে সংযুক্ত হবে তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে।


এখানে এখন আপনার আরেকটি প্রশ্ন মনে আসতে পারে যে, এই যে সারা বিশ্বে অগণিত কম্পিউটার ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করছে বা এটা ঠিক রাখার জন্য কাজ করছে তাতে তাদের কি লাভ অর্থাৎ আমি কেন আমার কম্পিউটারকে ব্লকচেইন এর তথ্য ভেরিফাই করার জন্য ব্যবহার করব এতে আমার কি লাভ বরং এখানে আমার বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে এছাড়াও আমার কম্পিউটার ব্যবহার হচ্ছে এতে আমার লাভই বা কি?

উপহার বলে একটা শব্দ রয়েছে আর যারা ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করার কাজ করছে তারা উপহার হিসেবে সামান্য কিছু বিটকয়েন পেয়ে থাকে। আবার যে সকল কম্পিউটার ভুল ভেরিফিকেশন করে তারা পানিশমেন্ট  বা শাস্তিও পেয়ে থাকে। পেনাল্টি দেওয়া হয় তাদের। তাই এই প্রতিষ্ঠানটি উপহার এবং শাস্তি এই দুইয়ের মাঝে নিয়ন্ত্রণ হয় সম্পূর্ণ ডিসেন্ট্রালাইজড নিয়মে।


বর্তমানে বিশ্বে কোন কোন সেক্টরে এই ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহার করা যেতে পারে? (In what sectors of the world can blockchain technology be used today?)

ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহার করার প্রথম যে চিন্তাটা মাথায় আসে সেটি হচ্ছে ইলেকশনে ভোটিং সিস্টেমে ব্লকচেইন টেকনোলজির ব্যবহার। বাস্তবে ব্লকচেইন টেকনোলজি ইলেকশন ভোটিং সিস্টেম কে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমান ভোটিং সিস্টেম এ ব্লকচেইন টেকনোলজি ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে।


বর্তমানে বাস্তব জীবনে ব্লকচেইন টেকনোলজির কোন উদাহরণ আছে?

বর্তমান বিশ্বে এমন অনেক সেক্টর রয়েছে যেখানে ব্লকচেইন টেকনোলজি্র সফল ব্যবহার প্রতিনিয়ত হচ্ছে। আমরা এগুলা বিভিন্ন সেক্টর ভেদে দেখতে পারি। যেমনঃ

 

১) স্বাস্থ্য সেবা দপ্তরেঃ ( Healthcare sectors)

এখানে মেডিকেলের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত এবং রোগীদের মেডিকেল রিপোর্ট ডিসেন্ত্রালাইজড নিয়মে সংরক্ষিত থাকে। যখন কোন ডাক্তারের প্রয়োজন পড়বে তখন সে উক্ত পেশেন্টের অনুমতিক্রমে তার ফাইল বা তথ্য গুলো দেখতে পাবে।

 

২) ট্রেডিং প্লাটফর্মঃ (Trading platform)

ট্রেডিংয়ে ব্লকচেইন টেকনোলজি অনেক ব্যবহার করা যেতে পারে। উইট্রেড ( WeTrade) নামক এমন একটি প্লাটফর্ম সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে যেটি ব্লকচেইন টেকনোলজি এর উপর নির্ভরশীল। এখানে যখন একজন ক্রেতা কোন কিছু অর্ডার করে কিন্তু ক্রেতা বিক্রেতা সম্পর্কে কোন ধারণা তাকে না অর্থাৎ বিক্রেতা তাকে উক্ত পণ্যটি পাঠাতে পারবে কিনা আর বিক্রেতার ক্রেতা সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না যে ক্রেতা তাকে উক্ত পণ্যের মূল্য পরিশোধ ঠিকমতো করতে পারবে কিনা এইখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে ব্লকচাইন টেকনোলজির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম কাজকরে আর সেটাকে বলা হয় স্মার্ট কন্ট্রাক্ট ( Smart Contract)। এটির কাজ হচ্ছে যখন বিক্রেতা ক্রেতাকে কোন পণ্য পাঠায় তার যখন ক্রেতা সেটি গ্রহণ করে তখন অটোমেটিকভাবে ক্রেতার অ্যাকাউন্ট থেকে বিক্রেতার একাউন্টে উক্ত পণ্যের মূল্য পরিশোধ করা হয়ে যায় সম্পূর্ণ ডিসেন্ট্রালাইজড নিয়মে হয়ে থাকে। তাই চাইলেও ক্রেতা-বিক্রেতা একে অপরে অপথের শিকার হতে হয় না।

এরকমভাবে প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট , ক্রাউডফান্ডিং, সরকারি রেকর্ডস এ সমস্ত জিনিসের ম্যানেজমেন্ট খুব সুন্দর ভাবে করা যেতে পারে এই ব্লক চেন টেকনোলজি উপর ভিত্তি করে।


৩) পাবলিক তথ্য সংরক্ষণেঃ (Preserving public information)

FollowMyVote যুক্তরাষ্ট্রের একটি অনলাইন ভোটিং প্লাটফর্ম। যেটি তাদের সিস্টেমকে সম্প্রতি ব্লক চেইন টেকনোলজির এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নাগরিক এর মতামত জানার জন্য উক্ত ভোট প্লাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে।

এস্তোনিয়া গার্ডটাইম নামক একটি সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা তাদের সম্পূর্ণ তথ্য কে ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং তারা ব্লকচেইন ২.০  টেকনোলজি এর উপর ভিত্তি করে তাদের তথ্যগুলো সিকিউর রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল গভমেন্ট তাদের যাবতীয় তথ্যাদি ব্লকচেইন টেকনোলজি তে সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফেডারেশন পেটেন্ট, ট্রেডমার্কস, সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বার, ভিসা, পাসপোর্ট, ইত্যাদি।


৪) খুচরা বিক্রেতা শিল্পে ব্লকচেইন টেকনোলজির ব্যবহারঃ (Blockchain technology in the retail industry)

খুচরা বিক্রেতা শিল্পের তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ দূরীকরণে বর্তমানে বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের নেটওয়ার্ক সিস্টেম ব্লকচেইনে অন্তর্ভুক্ত করেছে এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ইকমার্স প্রতিষ্ঠান। আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে বিভিন্ন লেনদেন এবং বিভিন্ন তথ্যাদি পাঠানো এবং গ্রহণ সম্পন্ন প্রক্রিয়া এখন এই ব্লকচেইনের উপর ভিত্তি করে তারা করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কোম্পানি হচ্ছে ইকয়েনমার্চ (Ecoinmerce) এটি একটি যুক্তরাষ্ট্রের ডিজিটাল সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও  একই রকম লয়াল নামক আরেকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।


৫) অতিরিক্ত খরচ এবং ফি কমানোর ক্ষেত্রেঃ ( additional costs and fee reductions)

বর্তমানে আমরা যেকোন ডিজিটাল লেনদেন করতে গেলেই বা কোনো পণ্য লেনদেন করতে গেলে সেখানে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয় এছাড়াও রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত সার্ভিস ফি। যা আমাদের অর্থ অপচয় করে থাকে। কিন্তু ব্লকচেইন টেকনোলজি নির্ভর কিছু ব্যাংকিং সিস্টেম ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে যারা আর্থিক লেনদেন সহ বিভিন্ন পণ্য খুব কম খরচে ব্লকচেইন সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট ভিত্তিক সেবা দিচ্ছে। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ব্যাংক হপালিয়াম। ইসরাইল ব্যক্তিকে কোম্পানিটি সম্প্রতি মাইক্রোসফট এর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যেখানে তারা একে অপরের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহ ব্যাংক ট্রানজেকশন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্পন্ন করবে।

এছাড়া হাইড্রোজেন মলিকিউল এবং এটার্নিটি নামক দুটি কোম্পানিও একই প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে এবং তাদের কার্যক্রম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি করছে।


৬) রোগীর ডাটাবেজ এর সত্যতা পরিচালনা করার ক্ষেত্রেঃ (Managing the patient database's authenticity)

সম্প্রতি কিছু সফটওয়্যার কোম্পানি ব্লকচেইন টেকনোলজি্র উপর ভিত্তি করে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে যেখানে রোগীদের ডাটাবেজ লিপিবদ্ধ করা থাকবে আর ডাক্তাররা চাইলে উক্ত রোগীর দেওয়া তথ্যমতে তার রিপোর্ট দেখতে পাবে। সম্প্রতি এমনই কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন মিডরেক যেটি এমআইটি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি প্রজেক্ট। এটি হেলথকেয়ার ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণে ব্লকচেইন ভিত্তিক সেবা প্রদান করে থাকে।

এই তালিকায় আরও রয়েছেন মেডিকেলচেইন নামক আরেকটি প্রতিষ্ঠান এছাড়াও রয়েছে সিম্প্লিভাইটালহেলথকেয়ার সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্ট আরেকটি কোম্পানি।  


৭) জমি রেজিস্ট্রি সমস্যার সমাধানঃ (Solve land registry issues)

ব্লকচেইন টেকনোলজি সবকিছু ছাড়িয়ে এখন এমন কিছু সমস্যার সমাধান দিচ্ছে যেগুলো ইতিপূর্বে মানুষ চিন্তা করতে পারেনি তারমধ্যে একটি রয়েছে জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা যেমন জমি রেজিস্ট্রি সহ বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন সবকিছুই এখন ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক ভিত্তিক সম্পূর্ণ করা যাবে খুবই নিরাপদ উপায়ে।

শেল্টার জুম নামক প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন সহ জমিজমা লেনদেন এবং ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়া সহ নানা রকম প্রক্রিয়াগুলো ইথারিয়াম ব্লকচেইন এর মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে যেটি বিটকয়েন ব্লকচেইন এর মতোই। এছাড়াও রয়েছে বিটুপ্রপার্টি, ইউভিকয়েটি না্মক আরো কিছু প্রতিষ্ঠান যারা কাজ করে ক্রেতা বিক্রেতা এবং রিয়েল স্টেট এজেন্টস এবং ভাড়াটাদের নিয়ে।

এছাড়াও ভবিষ্যতে আরো নানা রকম সমস্যা সমাধান হবে এই ব্লকচেইন টেকনোলজির মাধ্যমে। এবং এটা নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে গবেষণা চলছে প্রতিনিয়ত।

বর্তমানে প্রত্যেকটি দেশের সরকার তাদের নাগরিকদের হাজার রকমের তথ্য সংরক্ষণ করে আবার এরকম শোনা যায় যে কোন দেশের নাগরিকের তথ্য সরকারিভাবে  অনিয়ন্ত্রণ হয়ে পড়েছে অর্থাৎ অন্য কারও হাতে এসকল তথ্য গুলো চলে গিয়েছে আর এতে সরকার এবং উক্ত দেশের জনগণের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র ব্লকচেইন টেকনোলজি যেটি ব্যবহার করে সরকার তার নাগরিকদের তথ্য সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং নিয়ন্ত্রিত রাখতে পারে। আর নাগরিকরাও সরকার বা তৃতীয় কারো কাছে আটকে থাকবে না তথ্যের জন্য।

আগামী বিশ্বে আমরা ডিসেন্ট্রালাইজেশন এর দুনিয়ায় পদার্পণ করতে যাচ্ছি অর্থাৎ যেখানে সবকিছুই হতে যাচ্ছে ব্লকচাইন টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে। যেখানে তৃতীয় পক্ষের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না কোন কিছুতে। সম্প্রতি অনেক আপ্লিকেশন এবং কম্পিউটার সফটওয়্যার উক্ত ব্লকচেইন টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এবং তা প্রতিনিয়ত মানুষদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাই আশা করা যায় আগামী বিশ্বে হয়তো আমরা সম্পূর্ণ ব্লকচেইন টেকনোলজি ছাড়া চলতে পারব না। আমাদের সবকিছুই হবে এই টেকনোলজি এর উপর ভিত্তি করে। ব্লকচেইন টেকনোলজি পুরো দুনিয়াকে রেভ্যুলেশনারিস করবে। যেমনটা ইন্টারনেট আবিষ্কারের সময় হয়েছিল। বর্তমানে ইন্টারনেট ছাড়া আমরা প্রায় অচল তেমনি ভাবে আগামী দশ থেকে পনের বছর পর হয়তো ব্লকচেইন টেকনোলজি ছাড়া আমরা কোন কিছু কল্পনাও করতে পারবোনা। 

 

You may like

ক্রিপ্টোকারেন্সির নিয়মিত খবর জানার জন্য যে সাইট গুলো আপনার নিয়মিত অনুসরণ করা উচিৎ।

Next Post Previous Post
2 Comments
  • MD:MAHADI HASSAN
    MD:MAHADI HASSAN November 2, 2021 at 9:01 PM

    আপনার সাইটটি খুব যুগউপযোগী। আমি আপনার সাইট থেকে অনেক উপকৃত হয়েছি। আমি আশা করি আরো ভাল কিছু পাবো আপনার থেকে ।Visit আপনার অনুপ্রেরণায় আমি একটি সাইট তৈরি করেছি আশা করি সকলের উপকারে আসবে !

  • Unknown
    Unknown February 18, 2022 at 3:20 AM

    ইনফরমেশন গুলো অনেক কাজে লেগেছে। ধন্যবাদ।

Add Comment
comment url